রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রী থেকে ডাক্তার দেখাতে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছেন মাহমুদ হাসান। চিরাচরিত চিত্রের বাইরে গন্তব্যে আসার পথ ফাঁকা পেয়ে দ্রুতই পৌঁছান তিনি।
জাগো নিউজকে তিনি বলেন, গত সপ্তাহেও হাসপাতালে এসেছিলাম। কমপক্ষে দেড় ঘণ্টা সময় বাইকেই লেগেছিল। বাসে বা অন্য পরিবহনে তো আরও বেশি। তবে সড়ক এখন অনেক ফাঁকা। ২৫ মিনিটেই আসতে পারলাম। এ সময়টা আমরা যারা ঢাকায় থাকি তাদের জন্য খুব এনজয়েবল।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে নাড়ির টানে কোটি মানুষ যান্ত্রিক শহর ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। অনেকেই ছুটি কাটাতে যাচ্ছেন দেশ-বিদেশের পর্যটন কেন্দ্রে।
শনিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে রাজধানীর তেজগাঁও, কলেজগেট, ফার্মগেট, ধানমন্ডি ৩২, মিরপুর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে তুলনামূলকভাবে অন্য দিনের চেয়ে সড়কে যানবাহন কম। আগের মতো যান্ত্রিক শব্দ নেই, নেই বেশি কোলাহল। সড়কে যেসব যানবাহনের দেখা মেলে তার অধিকাংশেরই গন্তব্য বাস টার্মিনাল ও রেল স্টেশন কিংবা সদরঘাট। আবার নিকট দূরত্বের বাজার কিংবা পশুর হাটগামী মানুষের সংখ্যাও বেশি।
দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে দেখা যায়, সিগন্যালে নেই আগের মতো দীর্ঘ গাড়ির সারি। দুই চারটা যানবাহন আসছে তো নিজেদের মতো করে ১০/২০ সেকেন্ড অপেক্ষা শেষে ছেড়ে যাচ্ছে গন্তব্যে। এ জন্য চাপ নেই ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মধ্যে।
বিজয় সরণি মোড় পেরিয়ে তেজগাঁও ফ্লাইওভারে উঠার মুখে কথা হয় বাইক সার্ভিস দোকানের কর্মচারী আতাউরের সঙ্গে।
তিনি বলেন, অন্য যে কোনো সময় এই সিগন্যাল এক চান্সে পেরিয়ে যাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু এখন খুব দ্রুতই সব লেনের গাড়ি চলাচল করছে। কারণ গাড়ির চাপ নেই, মানুষের সংখ্যা কম থাকায় কারো মধ্যে পেরেশানি নেই।
বিজয় সরণি মোড়ে ডিউটিরত এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য জাগো নিউজকে বলেন, ‘শহরটা যদি সব সময় এমন থাকতো। দুর্ঘটনা ঘটতো না, গাড়ির চাপে মানুষ আমাদের গালিগালাজও করতো না। থাকতো না যানজট। মানুষ খুব সহজভাবে চলাচল করতো।’ তবে এখনকার দৃশ্যটা কাম্য হলেও বাস্তবতা বদলে যাবে ঈদের ২- ৪ দিন পরই। এ ক’টা দিনই যা স্বস্তি।
কলেজ গেটে কথা হয় দিনাজপুরগামী যাত্রী সাহাদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, সারা ঢাকা শহর এখন ফাঁকা। শান্তিনগরের বাসা থেকে প্রাইভেটকারে যাচ্ছি কল্যালপুর। সড়কে কোনো চাপ নেই সবার গন্তব্য যেন এখন বাস টার্মিনাল। শ্যামলী আসার পর মানুষের আনাগোনা টের পাচ্ছি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের উপ কমিশনার জসিম উদ্দিন বলেন, ট্রাফিক সিগনালে চাপ নেই। চাপ এখন গরুর হাট ও বাস টার্মিনালে। সঙ্গত কারণে গরুর হাট ও বাস টার্মিনালে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় বেশি নজর রাখা হচ্ছে।
জেইউ/এএইচ/এমএস