কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গত কয়েকদিন ধরে অন্যরকম আবহ বিরাজ করছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দলটির নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি যেন বদলে দিয়েছে নয়াপল্টনের স্বাভাবিক চিত্র।এদিকে নেতাকর্মীদের মধ্যে কাউন্সিল নিয়ে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা গেলেও উদ্বেগ উৎকন্ঠাও রয়েছে। নেতাদের অনুসারীরা অপেক্ষায় আছেন তাদের নেতা কাঙ্ক্ষিত পদ পাবেন কিনা? কোন বিবেচনায় গঠন করা হবে নতুন কমিটি? সেখানে কি ত্যাগীদের মূল্যায়ন হবে নাকি ব্যাবসায়ী তোষামোদকারীদের বরণ করা হবে?বিএনপি এই মুহূর্তে রাজনীতির খাদে রয়েছে। কাউন্সিলের মাধ্যমে সাংগঠনিকভাবে দলটি আরো গতিশীল হবে নাকি কাউন্সিলের পর নেতাদের মাঝে দূরত্ব তৈরি হবে সার্বিক বিষয় নিয়ে এক ধরনের আশংকাও রয়েছে।ইতোমধ্যেই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক ছাত্র নেতারা দলের মূল দায়িত্ব আসবেন এবং বয়স্করা উপদেষ্টা পরিষদে যাবেন।বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিবসহ অন্যান্য পদের ক্ষেত্রে অনেক নতুন মুখ আলোচনায় রয়েছে। দলে নতুন পদ সৃষ্টি হচ্ছে এমন গুঞ্জনও রয়েছে।কয়েকদিন আগে কো-চেয়ারম্যান এবং দুই মহাসচিবের আলোচনা থাকলেও তার চেয়ে এখন বেশি আলোচিত হচ্ছে অতিরিক্ত মহাসচিব এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক সচিব পদ। এর আগে এই রাজনৈতিক সচিব পদটি থাকলেও গত কাউন্সিলে বাদ যায়।কাউন্সিলকে সামনে রেখে শীর্ষ পদগুলোকে ঘিরে নেতাদের মধ্যেই বিভক্তি দিন দিন স্পষ্ট হচ্ছে। একপক্ষ চায় দলে নিষ্ক্রিয় এবং বিতর্কিতরা বাদ যাক। আরেকটি পক্ষ সক্রিয় আছে বিকল্প মাধ্যমে কিভাবে পদ বাগিয়ে আনা যায়।এদিকে বিভিন্ন পদ নিয়ে নানা আলোচনা থাকলেও এখনো স্পষ্ট হয়নি কে পাচ্ছেন কোন পদ। ইতোমধ্যেই চেয়ারপারসন পদে বেগম খালেদা জিয়া এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারয়াম্যান পদে তারেক রহমান নির্বাচিত হয়েছেন।যেহেতু শীর্ষ পদ নির্বাচন হয়ে গেছে বাদবাকি পদগুলোর ক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের চেয়ে বিএনপির হাইকমান্ডের দৃষ্টিভঙ্গিই বেশি প্রাধান্য পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।তবে কাউন্সিলের দিন ১৯ মার্চ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সম্ভাবনা নেই বলে মনে করেন অনেকে। এ প্রক্রিয়া শেষ হতে অন্তত দেড় মাস সময় লাগতে পারে বলে জানা গেছে।শেষ পর্যায়ে ত্যাগীদের মূল্যায়ন হবে নাকি ব্যবসায়ীদের দখলে যাবে বিএনপির নির্বাহী কমিটি তার জন্য নতুন কমিটি ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নুরুল আমিন বেপারী মনে করেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সফলতার মুখ না দেখলেও বিএনপি ঘুরে দাঁড়াবে।তবে একই বিভাগের শিক্ষক শান্তনু মজুমদার মনে করেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বলতে যেটা বোঝায় দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দলের নেতা নির্বাচনে সে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় না। কাউন্সিলের মাধ্যমে বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।এদিকে বিএনপির কাউন্সিলে নতুন মুখের আলোচনায় থাকা ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবুল আশাবাদ ব্যক্ত করে জাগো নিউজকে বলেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে বিএনপি অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে। নেতাকর্মীদের আশার প্রতিফলন ঘটবে।এমএম/এসএইচএস/পিআর