খুঁড়িয়ে চলছে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতাল। চিকিৎসক, জনবল, পর্যাপ্ত ওষুধ ও বিছানা সঙ্কটে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালটি। এ অবস্থায় ঠাকুরগাঁওসহ আশপাশের তিন জেলার রোগীর চাপ সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা। জানা গেছে, ১৯৮৭ সালে ৫০ শয্যা নিয়ে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালটি যাত্রা শুরু করে। ১৯৯৭ সালের জুলাইতে এটিকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও দীর্ঘ ১৭ বছরে বাড়েনি ডাক্তারসহ প্রয়োজনীয় জনবল। জোড়াতালি দিয়ে চলছে ৫০ শয্যারও কম জনবল দিয়ে। যেখানে ৫০ শয্যার হাসপাতালেই ২২ জন চিকিৎসকের প্রয়োজন, সেখানে ১০০ শয্যায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও আছেন মাত্র ১৪ জন। হাসপাতালটিতে সার্জারি, চক্ষু, নাক-কান-গলা, প্যাথলজি, রোডিওলজিস্ট ও চর্ম-যৌন বিভাগের আটজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় প্রতিনিয়ত এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, নার্স ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর ১৮টি পদ শূন্য থাকায় রোগীর চাপ সামলাতে দিশাহারা কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে বেডের অভাবে মেঝে, বারান্দা ও সিঁড়ির ফাঁকে গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। বহির্বিভাগ সূত্র জানায়, এ হাসপাতালে ঠাকুরগাঁও ছাড়াও পাশের জেলা পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও নীলফামারী থেকে প্রতিদিন সাত থেকে আটশ রোগী চিকিৎসা নেন। আর দৈনিক ভর্তি হন প্রায় ২০০-৩০০ জন। রোগীদের অভিযোগ, তারা ডাক্তার, নার্স, বিছানা ও ওষুধসহ কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না। সরকার বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহের কথা বললেও সদর হাসপাতালে প্যারাসিটামল, মেট্রিল আর স্যালাইন ছাড়া কোনো ওষুধ পাওয়া যায় না। বাকি প্রয়োজনীয় ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়।চিকিৎসা নিতে আসা রোগী রফিকুল ইসলাম জানান, আমরা গরিব মানুষ বলেই সরকারি হাসপাতালে আসি। কিন্তু এখানে এসেও টাকা খরচ করতে হচ্ছে। আমরা চাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।কর্মরত সেবিকারা জানান, হাসপাতালে প্রতিদিন প্রচুর রোগী আসে। কিন্তু সে অনুপাতে এখানে চিকিৎসক কিংবা সেবিকা নেই। তাই চিকিৎসা বা সেবা দিতে আমাদেরকে হিমশিম খেতে হয়। এ জন্য মাঝে মধ্যে আমাদের ও রোগীদের একটু সমস্যা হয়।এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. নজরুল ইসলাম জানান, ৫০ শয্যার জনবলের চেয়ে কম জনবল দিয়ে ১০০ শয্যার হাসপাতালটি পরিচালনা করতে হচ্ছে। এ কারণে রোগীরা যতটুকু সেবা পাওয়ার কথা তা পাচ্ছেন না। হাসপাতালটিতে জনবল বাড়ানো হলে আশপাশের তিন জেলার রোগী চিকিৎসা সেবা পাবেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।এফএ/এবিএস