দেশজুড়ে

ভবনের অবস্থা বেহাল, কমেছে পাঠক

জরাজীর্ণ ভবন। খসে খসে পড়ছে পলেস্তারা। কিছু জায়গায় পলেস্তারা খসে পড়ে বেরিয়ে গেছে রড। বর্ষা মৌসুমে ছাদ চুইয়ে পড়ে পানি। চেয়ার-টেবিলগুলো ধুলা-বালিতে একাকার।

এমনই বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে মাদারীপুরের সবচেয়ে বড় এম এম হাফিজ মেমোরিয়াল পাবলিক লাইব্রেরিতে। ভবনের সংস্কার না হওয়ায় কমে গেছে পাঠক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৫০ সালে তৎকালীন সাব-রেজিস্ট্রারের উদ্যোগে মাদারীপুর টাউন ক্লাবকে মাদারীপুর পাবলিক লাইব্রেরি করা হয়। পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের শকুনী মৌজায় একটি টিনশেড ঘরে শুরু হয় লাইব্রেরির কার্যক্রম। পরে ১৯৬৮ সালে জেলা প্রশাসক এমএম হাফিজ লাইব্রেরির ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেন। দুর্ভাগ্যবশত ওই বছর তিনি একটি দুর্ঘটনায় মারা যান। পরে তার নামেই ১৯৬৯ সালে নতুন ভবনের উদ্বোধন করা হয়। এরপর আর উল্লেখযোগ্য কোনো সংস্কার করা হয়নি।

লাইব্রেরিতে বর্তমানে ১৫ হাজারের মতো বই আছে। আজীবন সদস্য আছেন ১৫০ জন। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হওয়ায় পাঠকরা আসতে ভয় পান। তারপরও প্রতিদিন ২০-২৫ জন পাঠক আসেন নিয়মিত। বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত লাইব্রেরি খোলা থাকে। একজন লাইব্রেরিয়ান ও একজন সহায়কের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে লাইব্রেরির কার্যক্রম।

সুমন হাসান, সুজন, জাকির হোসেন, আল-আমিনসহ একাধিক পাঠক বলেন, লাইব্রেরিতে এলে আতঙ্কে থাকি কখন না জানি মাথার ওপর পলেস্তারা খসে পড়ে। এটি সংস্কার করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

তারা আরও বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই লাইব্রেরিতে বসে পড়া যায় না। হাঁটুপানিতে তলিয়ে থাকে লাইব্রেরি। পাঠকদের কথা চিন্তা করে এটির সংস্কারের দাবি জানাই।

এমএম হাফিজ মেমোরিয়াল পাবলিক লাইব্রেরির সহায়ক আইয়ুব আলী বলেন, ভবনটির বিভিন্ন জায়গার পলেস্তারা খসে পড়ছে। তবে এটি খুব শিগগির সংস্কার করা হবে।

কথা হয় লাইব্রেরিয়ান মো. অজিউল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ ভবন ও কমিটি না থাকায় লাইব্রেরির অবস্থা খারাপ ছিল। বর্তমানে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে একটি কমিটি করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমেই লাইব্রেরির উন্নয়ন কাজ করা হবে। এক মাসের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।

লাইব্রেরির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও আহ্বায়ক কমিটির কোষাধ্যক্ষ লিখন মাহমুদ তুর্য জাগো নিউজকে বলেন, এরইমধ্যে মাদারীপুর জেলা পরিষদ থেকে তিন লাখ ও উপজেলা পরিষদ থেকে তিন লাখ ৯০ হাজার টাকার ব্যবস্থা হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে ১০ লাখ টাকা পাওয়া যাবে। তা দিয়ে খুব দ্রুত লাইব্রেরির সংস্কার কাজ হাতে নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহ মোহাম্মদ সজীব বলেন, লাইব্রেরিটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিগগির তা বাস্তবায়ন করা হবে।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসআর/এএসএম