রংপুরের গঙ্গাচড়ায় একই প্রশ্নপত্রে তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এতে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। বিষয়টির জন্য কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গঙ্গাচড়া উপজেলার ১৭৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত ৮ মে থেকে একযোগে প্রথম প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা শুরু হয়। রুটিন অনুযায়ী মঙ্গলবার (২০ মে) শিল্পকলা (চারু ও কারুকলা, সংগীত, নৃত্যকলা, নাট্যকলা) বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকারের নির্বাহী আদেশে ঈদের আগে শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হলে তিনদিন আগে শনিবার (১৭ মে) দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
তবে পরীক্ষা দিতে গেলে বিপাকে পড়ে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। মূলত পরীক্ষার প্রশ্নপত্রটি ছিল পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য। বিষয়টি নজরে এলে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো উপায় না পেয়ে ওই প্রশ্নপত্রেই পরীক্ষা নিতে বাধ্য হন শিক্ষকরা। পঞ্চম শ্রেণির প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল ২০ তারিখ। কিন্তু শনিবার স্কুল খোলা থাকায় গত শনিবার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির প্রশ্ন এক হওয়ায় আমরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যাই।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি করা প্রশ্নে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কীভাবে পরীক্ষা দেবে? তাদের হিমশিম খেতে হয়েছে। পরে উপায় না পেয়ে ওই প্রশ্নপত্রেই তৃতীয় শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়া হয়।’
উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমা জানায়, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেখে সে কিছুই বুঝে উঠতে পারেনি। এ বিষয়ে তার তেমন কোনো ধারণা ছিল না। একপর্যায়ে উপায় না পেয়ে ওই প্রশ্নপত্র দিয়েই তাকে পরীক্ষা শেষ করতে হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা ভালো হয়নি।
হাবু গজঘন্টা এলাকার অভিভাবক মিরাজুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এমন হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এমন না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নজর রাখার দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাগমা শিলভিয়া খানের ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। ভবিষ্যতে যেন এমন না হয়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাশাপাশি যারা এ ঘটনায় জড়িত তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জিতু কবীর/এসআর/এএসএম