কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পরকীয়ায় জড়িয়ে নিজের দেড় বছর বয়সী মেয়েকে গলাটিপে হত্যার অভিযোগ উঠেছে আয়েশা বেগম (২৫) নামে এক নারীর বিরুদ্ধে।
Advertisement
শনিবার (৭ জুন) রাত সাড়ে ৭টায় উপজেলার লক্ষ্মীপুর এলাকায় শাহিন কবিরের মালিকানাধীন ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই শিশুর নাম নুসরাত। সে নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার নিলক্ষা গ্রামের ওমর ফারুক ও অভিযুক্ত আয়েশা বেগম দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান। আলিফ নামে সাড়ে তিন বছর বয়সী তাদের আরেকটি ছেলে রয়েছে।
শনিবার রাত ৯টায় ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনার খবর পেয়ে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে ও আয়েশা বেগমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিশের কাছে আয়েশা বেগম তার সন্তানকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে।
Advertisement
রোববার (৮ জুন) দুপুরে শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জে পাঠানো হয়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলার প্রস্ততি চলছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নরসিংদীর ওমর ফারুকের সঙ্গে পাঁচ বছর আগে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া গ্রামের আবদুল মান্নানের মেয়ে আয়েশা বেগমের বিয়ে হয়। স্বামী ওমর ফারুক ভৈরবের একটি জুতার কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। আলমগীর নামে তার এক সহকর্মী বাসায় যাতায়াত করতেন। এই সুযোগে তার স্ত্রী আয়েশা আলমগীরের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। পরে গত দেড় মাস আগে স্বামীকে না জানিয়ে আয়েশা তার বড় সন্তান আলিফকে স্বামীর বাড়ি রেখে রেখে ছোট সন্তান নুসরাতকে নিয়ে আলমগীরের সঙ্গে পালিয়ে ভৈরব শহরে শাহিন কবিরের বাসায় গোপনে বসবাস করতে থাকেন। এ ঘটনার পর স্বামীসহ তার পরিবার দেড়মাস ধরে খুঁজেও তাকে পায়নি। এরই মধ্য স্বামী ওমর ফারুক বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। গত শনিবার রাতে ভৈরব থানা পুলিশ আয়েশার শ্বশুর আবুল কালামকে ফোনে ঘটনাটি অবহিত করলে রাতে তিনি অপর নাতিকে নিয়ে থানায় উপস্থিত হন।
আয়েশার শ্বশুর আবুল কালাম জানান, রাত ১১টায় ঘটনার খবর পেয়ে বড় নাতি আলিফকে নিয়ে ভৈরব থানায় আসি। বাড়ি থেকে দেড়মাস আগে আয়েশা কোলের শিশুকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি, কিন্তু পাইনি। তার বাবার বাড়িতে যোগাযোগ করলে তারা বলেছেন মেয়ে তার বাড়িতে আছে। ঘটনার পর আমার ছেলেও নিখোঁজ রয়েছে।
পুত্রবধূর এমন ঘটনায় তিনি হতবাক হয়েছেন। এ ঘটনায় আয়েশাসহ তার পরকীয়া প্রেমিক আলমগীরের কঠোর বিচার দাবি করেন তিনি।
Advertisement
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফূয়াদ রুহানী জানান, শনিবার রাত ৯টায় ঘটনার খবর পেয়ে শহরের লক্ষ্মীপুর এলাকার শাহিন কবিরের মালিকানাধীন ভাড়া বাসা থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় মা আয়েশাকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি পরকীয়ার কারণে ঘটেছে। হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন আয়েশা। শিশুর মরদেহ ময়নাতদন্ত করার জন্য কিশোরগঞ্জ পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় আয়েশার শ্বশুর আবুল কালাম থানায় বাদী হয়ে মামলার প্রস্ততি চলছে। পরে মামলাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজীবুল হাসান/এমএন/এমএস