ধর্ম

কোরবানির মাংস সংগ্রহ করে বিক্রি, ইসলাম কী বলে?

কোরবানির মাংস সংগ্রহ করে বিক্রি, ইসলাম কী বলে?

আমাদের দেশে ঈদুল আজহার মৌসুমে অনেক ভিক্ষুক কোরবানির মাংস সংগ্রহ করে সেগুলো আবার বিক্রি করে দেয়। অনেকে জানতে চান, কোরবানির মাংস এভাবে বিক্রি করা এবং তাদের কাছ থেকে ওই মাংস ক্রয় করা জায়েজ হবে কি না?

Advertisement

এ প্রশ্নের উত্তর হলো, হ্যাঁ, জায়েজ হবে, ভিক্ষুকদের জন্য কোরবানির মাংস সংগ্রহ করে বিক্রি করা জায়েজ, তাদের কাছ থেকে ওই মাংস ক্রয় করাও জায়েজ।

কারণ কোরবানির মাংস দরিদ্র ব্যক্তির হাতে পৌঁছানোর পর তা তার মালিকানায় চলে যায়। এরপর সে যেভাবে চায়, সেভাবে তা ব্যবহার করতে পারে যেহেতু সেটা তার নিজের কোরবানির মাংস নয়। তাই সদকা হিসেবে গ্রহণ করা অন্যান্য অর্থ বা খাবারের বিধানই ওই মাংসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

ইসলামি আইনবিশারদগণের মতে সদকা যখন প্রাপক গ্রহণ করে, তখন সেটি তার ব্যক্তিগত সম্পদ হয়ে যায়। সে চাইলে সেটা খেতে পারে, অন্যকে দিতে পারে, এমনকি বিক্রি করাও তার জন্য বৈধ। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ৫/৩০০, বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২১১)

Advertisement

ঈদুল আজহার বিশেষ আমল কোরবানির মাংস খাওয়া ও খাওয়ানো

কোরবানির মাংস নিজে খাওয়ার পাশাপাশি অভাবীদের খাওয়ানো বা দান করা ঈদুল আজহার একটি বিশেষ আমল। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন,

فَکُلُوۡا مِنۡهَا وَ اَطۡعِمُوا الۡقَانِعَ وَ الۡمُعۡتَرَّতোমরা তা থেকে খাও এবং খাওয়াও মানুষের কাছে হাত পাতে না এমন অভাবীদের এবং চেয়ে বেড়ায় এমন অভাবীদের। (সুরা হজ: ৩৬)

তাই কোরবানির মাংস নিজে খাওয়া, কোরবানি করতে পারেনি এমন আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীদের বাসায় পাঠানো এবং কোরবানির মাংস চাইতে আসা ভিক্ষুকদেরও কিছু মাংস দান করা উচিত। যেন ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই ঈদের আনন্দে শরিক হতে পারে।

কোরবানির মাংস তিন ভাগ করা কি জরুরি?

কোরবানির মাংস তিন ভাগ করে এক অংশ সদকা করা, এক অংশ আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও দরিদ্র প্রতিবেশীদের দেওয়া আর এক অংশ নিজের জন্য রাখা মুস্তাহাব বা উত্তম। কিন্তু এটা কোনো জরুরি বা আবশ্যক আমল নয়। উপরোক্ত তিন ভাগ সমান করাও জরুরি কিছু নয়।

Advertisement

অনেক মানুষ মনে করে, কোরবানির মাংস তিন ভাগে বণ্টন করা জরুরি এবং এতে সামান্য ত্রুটি করলেও কোরবানি হবে না। সাথে এটাও মনে করে, এ বণ্টন হতে হবে মেপে মেপে। এ তিন ভাগ ওজনে সমান হতে হবে, কোনো কমবেশি চলবে না। এ ধারণা সঠিক নয়।

ওএফএফ/জেআইএম