সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কাছারিবাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে এসে ঢুকতে পারেননি চিত্রনায়ক আশরাফ উদ্দিন আহমেদ (উজ্জ্বল)। সস্ত্রীক প্রধান ফটকে ছবি তুলেই ফিরে যান তিনি।
Advertisement
ঈদের ছুটিতে এক দর্শনার্থীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার পর বুধবার (১১ জুন) সকাল থেকে কাছারিবাড়িতে অনির্দিষ্টকালের জন্য দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বিকেলে স্থানীয় কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম জানান, চিত্রনায়ক উজ্জ্বল গতকাল (বুধবার) বিকেলে তার স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে এসে ফিরে গেছেন। হঠাৎ তার এমন উপস্থিতিতে কাছারিবাড়ির গেট এলাকায় ভক্তের সমাগম ঘটে। পরে কাছারিবাড়ির গেটে তার স্ত্রীর সঙ্গে ছবি তুলে নায়ক পাবনায় চলে গেছেন।
রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির কাস্টডিয়ান হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রত্যেক ঈদের সময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কাছারিবাড়িতে পরিবার-পরিজন নিয়ে লোকজন বেড়াতে আসেন। কিন্তু এবার হঠাৎ একটি অপ্রীতিকর ঘটনার জেরে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে। যে কারণে চিত্রনায়ক উজ্জ্বল কাছারিবাড়ির প্রধান ফটক থেকেই হয়তো ফিরে গেছেন।’
Advertisement
এরআগে রোববার (৮ জুন) বিকেলে স্থানীয় শাহনেওয়াজ নামের এক দর্শনার্থী তার স্ত্রী ও ভাতিজাকে নিয়ে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে বেড়াতে যান। এসময় ওই দর্শনার্থীর প্রবেশমূল্য নিয়ে নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই দর্শনার্থী থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু এতে পুলিশ প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়ায় ১০ জুন দুপুর ১২টার দিকে শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবের সামনে শাহনেওয়াজের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এই কর্মসূচি শেষে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে ৫০-৬০ জন বিক্ষুব্ধ জনতা প্রবেশ করে কাস্টডিয়ানের অফিস, লাইব্রেরি ও অডিটোরিয়ামের জানালা-দরজা ভাঙচুর করে চলে যায়।
পরে এ ঘটনায় বুধবার (১১ জুন) শাহজাদপুর পৌর শহরের রূপপুর মহল্লার শাহনেওয়াজকে প্রধান আসামি করে তার ভাই সবুজ, হান্নান ও সুমনসহ ১২ জনের নামে একটি মামলা করেন কাস্টডিয়ান হাবিবুর রহমান। এ মামলায় আরও ৫০-৬০ জন ব্যক্তিকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরমান হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন শাহজাদপুর সার্কেলের এএসপি কামরুজ্জামান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুশফিকুর রহমান।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আছলাম আলী জাগো নিউজকে বলেন, রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে হামলার ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে তারা আসামি শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা করছেন বলে তিনি জানান।
Advertisement
এম এ মালেক/এসআর/জেআইএম