কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সূর্যমুখী ভবনের দ্বিতীয়তলায় ১৯ নম্বর কক্ষে সাইদুর রহমান সুজন (৪৫) নামে এক বন্দি আসামি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে জানা গেছে। তাৎক্ষণিক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন।
Advertisement
সুজন সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ ১৫ মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ছিলেন।
রোববার (১৫ জুন) বেলা ১১টার দিকে কারাগারের সূর্যমুখী ভবনের ১৯ নম্বর কক্ষে গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক বলেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এক বন্দিকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহটি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়েছে। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে।
Advertisement
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা যায়, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সুজন সাধারণ একটি কক্ষে বন্দি ছিলেন এবং নিজের ব্যবহৃত গামছা দিয়েই ফাঁস দেন। কক্ষটিতে থাকা তিন বন্দির মধ্যে একজন আদালতে গিয়েছিলেন ও অপরজন ঘুমিয়ে ছিলেন, সেই ফাঁকে সুজন আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেন, একটি কক্ষে তিনজন বন্দি থাকতেন। তাদের মধ্যে একজন আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েছেন আর একজন ঘুমিয়েছিলেন সেই সুযোগে সুজন নিজের গামছা গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা করেন। পরে বিষয়টি জানতে পেরে প্রথমে তাকে কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়, সেখান থেকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, সাইদুর রহমান সুজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইন ও আইসিটিসহ অন্তত ১৫ টি মামলা রয়েছে। যতটুকু জানি, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কারা অধিদপ্তরের মিডিয়া বিভাগের সহকারী কারা মহাপরিদর্শক জান্নাত উল ফরহাদ বলেন, গত ২৫ এপ্রিল থেকে সুজনকে ডিটেনশনে রাখা হয়েছিল। তার সঙ্গে আরও দুইজনকে রাখা হতো। সুজন আজ বেলা ১১টার দিকে তার রুমে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাৎক্ষণিক বিষয়টি বুঝতে পেরে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, সুজনকে খাবার না দেওয়ায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন এমন একটি খবর ছড়িয়েছে যা সত্য নয়। কারণ এখানে সেই সুযোগ নেই।
জানা যায়, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সুজন আত্মগোপনে চলে যান। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ২০২৫ সালের জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।
কাজী আল-আমিন/কেআর/এমএএইচ/জেআইএম