বিদায়ের আগে ম্যাথিউজের কণ্ঠে আক্ষেপের সুর, ক্ষোভ প্রকাশ

১৬ বছরের ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে আজ মঙ্গলবার মাঠে নামবেন শ্রীলঙ্কার তারকা অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ। বাংলাদেশের বিপক্ষে গল টেস্ট খেলেই লাল বলের আন্তর্জাতিক জার্সি তুলে রাখবেন লঙ্কান ক্রিকেটার।

সুযোগ থাকলে হয়তো আরও কয়েকটি টেস্ট শ্রীলঙ্কার জার্সিতে খেলতেন ম্যাথিউজ। কিন্তু পরিস্থিতি যেন তাকে জোর করে আগেভাগেই অবসরে পাঠাচ্ছে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শেষে আগামী এক বছর শ্রীলঙ্কার কোনো টেস্ট ম্যাচ নেই। এত দীর্ঘ সময় হয়তো নিজের ফর্ম ও ফিটনেস ধরে রাখা সম্ভব নয়। কিংবা বর্তমানে ৩৮ বছর ১৫ দিন বয়সী তারকা ম্যাথিউজের বয়সের দিকটাও খেয়াল রাখতে হয়।

২০২৫ সালে শ্রীলঙ্কা মাত্র ৪টি টেস্ট খেলবে। যা ২০১৩ সালের পর কোনো ক্যালেন্ডার বছরের মধ্যে তাদের সবচেয়ে কম টেস্ট ম্যাচ সংখ্যা (কোভিডে সীমিত ২০২০ বাদ দিলে)। মূলত এই ফাঁকা সূচির কারণেই আগেভাগে অবসরে যাচ্ছেন ম্যাথিউজ। গলে শেষ টেস্টের আগে সংবাদ সম্মেলনে তাই ম্যাথিউজের কণ্ঠ থেকে ভেসে এসেছে আক্ষেপের সুর। প্রকাশিত হয়েছে চেপে রাখা ক্ষোভও।

সংবাদ সম্মেলনে ম্যাথিউজ টেস্ট ক্রিকেটের ক্রমাগত সংকোচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

ম্যাথিউজ বলেন, আসলে আমি মনে করি এটা খুবই দুঃখজনক। আমার কথা হলো, তরুণ প্রজন্ম এখন আরও বেশি টেস্ট ক্রিকেট চাচ্ছে। টেস্ট ক্রিকেটই তো ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়। আমাদের সবারই টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করা উচিত। এই তরুণরা টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে ভীষণ উৎসাহী।

অভিজ্ঞ লঙ্কান তারকা আরও বলেন, আমার মনে হয়, বছরে অন্তত ১০টা টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ থাকা উচিত। ইংল্যান্ড, ভারত, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলো বছরে ১৫টির বেশি টেস্ট খেলে। তাহলে আমরা কেন পারবো না? অবশ্যই পারবো। আমরা বিশ্বকাপ জিতেছি, দেশের হয়ে অনেক কিছু অর্জন করেছি ক্রিকেটে। তাই আমাদেরও ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতোই টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া উচিত।

ম্যাথিউসের এই ক্ষোভ নতুন নয়। বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজের আগে শ্রীলঙ্কার টেস্ট অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভাও একই বক্তব্য দিয়েছিলেন।

তবে ১১৮টি টেস্ট খেলা একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের মুখে এসব কথা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ ভবিষ্যতে আর ক’জন শ্রীলঙ্কান বাস্তবিক অর্থেই এই পরিমাণ টেস্ট খেলার সুযোগ পাবে!

লম্বা বিরতির কারণেই টেস্ট ক্রিকেট ছাড়া নিয়ে ম্যাথিউজ বলেন, আমি আমার ১০০তম টেস্ট খেলেছি গলে। তাই ভেবেছিলাম এখান থেকেই বিদায় বলি। তবে মূল কারণটা হচ্ছে, আমাদের সামনে কোনো টেস্ট ম্যাচ নেই, অন্তত এখনই না। এই ম্যাচের পর আমাদের পরবর্তী টেস্ট সিরিজ হবে এক বছর পর। এটা অনেক লম্বা একটা সময়।

তরুণদের জন্য জায়গা ছেড়েছেন উল্লেখ করে ম্যাথিউজ বলেন, আমি ভেবেছিলাম, দ্বিতীয় টেস্টে যেই আমার জায়গায় খেলবে, তাকে সুযোগ দেওয়া ভালো। কারণ সে এরপর আর অন্তত এক বছর সুযোগ পাবে না (হাসি)। আর ওই এক বছরে কী হবে, কে জানে! তাই ভেবেছি একটা ম্যাচ খেলে বিদায় নেই, আর বাকিদের জন্য জায়গা করে দিই।

এমএইচ/এএসএম