ক্যাম্পাস

সাজিদের মৃত্যুতে ফের উত্তাল ইবি, দাবি না মানলে ‘শাটডাউন’

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে ফের বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানলে বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউনের হুমকি দিয়েছেন তারা।

সোমবার (২১ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক আটকে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনসহ অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরাও এতে অংশ নেন।

আন্দোলন চলাকালে প্রধান ফটক আটকে রাখায় ক্যাম্পাস থেকে শহরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বিকেল ৪টার বাসগুলো আটকে পড়ে। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফটকের তালা খুলে দেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবি—মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা, ময়নাতদন্তের ভিসেরা প্রতিবেদন দ্রুততম সময়ে দেওয়া, প্রশাসনকে বাদী হয়ে মামলা, সাজিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, তদন্তের ভার পিবিআইকে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) দেওয়া, ক্যাম্পাসের সব জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়ে শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নিরাপত্তা প্রশাসনকে পরিপূর্ণ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে স্পষ্ট বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা চাওয়া।

এসময় শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের আহ্বান জানানো হয়। দাবি না মানলে বিশ্ববিদ্যালয়কে শাটডাউন ঘোষণা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

এর আগে শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টায় সাজিদের মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়। সোমবার প্রকাশিত ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে ময়নাতদন্তের প্রায় ৩০ ঘণ্টা আগে (আনুমানিক ১৬ জুলাই দিনগত রাত সাড়ে ৩টার আগে) সাজিদের মৃত্যু হয় বলে জানান কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. রুমন রহমান।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৬টায় শাহ আজিজুর রহমান হল পুকুর থেকে আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী সাজিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। ১৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসন থেকে দুটি তদন্ত কমিটি করা হয়। এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে উভয় কমিটি।

এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ ও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পুকুরে নামা নিষিদ্ধ করে মাইকিং করেছে প্রশাসন। এর আগে ১৯ জুলাই সাজিদের মৃত্যুকে ‘হত্যাকাণ্ড’ দাবি করে সুষ্ঠু তদন্ত ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে টানা পাঁচ ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, আমরা তদন্তের অগ্রগতির জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। এর আগে শিক্ষার্থীরা অনেকগুলো দাবি দিয়েছিলেন, যেগুলো বাস্তবায়নে কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী বলেন, তদন্তের বিষয়টি পুলিশের ওপর বর্তায়। আর যেহেতু তার বাবা একটি মামলা করেছেন, তাই এ বিষয়ে পুনরায় মামলা করার পরিকল্পনা নেই। আমরা তার পরিবারের করা মামলায় সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।

তিনি আরও বলেন, মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে প্রশাসনের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসন যথেষ্ট আন্তরিক বলেও জানান তিনি।

ইরফান উল্লাহ/এসআর/এমএস