একুশে বইমেলা

পাওয়া যাচ্ছে ‘হোয়াট ইজ এ মাদরাসা’র বাংলা অনুবাদ

ভারতীয় উপমহাদেশের ইসলামি শিক্ষার ওপর রচিত ইব্রাহিম মূসার বিখ্যাত বই ‘হোয়াট ইজ এ মাদরাসা?’ বইটি বাংলা অনুবাদে নিয়ে এসেছে চৈতন্য প্রকাশন। অনুবাদ করেছেন লেখক ও অনুবাদক মোহাম্মদ বশির উদ্দিন। ভূমিকা লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাস্টিস অ্যান্ড পিস স্টাডিজ প্রোগ্রামের সহকারী অধ্যাপক ড. হেলাল মুহাম্মদ খান।

ভারতীয় উপমহাদেশের মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর লিখিত বইটি ২০১৫ সালে ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলিনা প্রেস থেকে প্রকাশের পর ইসলামি জ্ঞানচর্চার জগতে বেশ আলোচনার সৃষ্টি করে। ভারতে ও পাকিস্তানে উর্দু ভাষায় অনূদিত হওয়ার পর এবার বাংলায় প্রকাশিত হলো বইটি।

বইটি সম্পর্কে ড. হেলাল মুহাম্মদ খান ভূমিকায় লিখেছেন, ‘বইটি একাধারে আত্মজীবনী, সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান এবং সমালোচনামূলক প্রবন্ধ। বইটি চারটি অংশে বিভক্ত—প্রত্যেকটি অংশ মাদ্রাসা নামক প্রতিষ্ঠানকে বোঝার জন্য একটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ উপস্থাপন করে। দারুল উলুম দেওবন্দে লেখকের ছাত্রজীবনের অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে মাদ্রাসার অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং ৯/১১ পরবর্তী বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে এর রাজনীতিকরণ পর্যন্ত বিশদ বিবরণ পাঠককে এক জ্ঞানসন্ধানী ও আবেগঘন যাত্রায় নিয়ে যায়। পশ্চিমা ভ্রান্ত ধারণা অতিক্রম করে মূসা মাদ্রাসাকে উপস্থাপন করেন একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ, নৈতিক প্রশিক্ষণ ও আত্মিক অন্বেষণের স্থান হিসেবে।’

বইটি সাধারণ পাঠক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য লেখা। এক অর্থে এটি মাদরাসার সাংস্কৃতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও ধর্মীয় অভিজ্ঞতাগুলোর প্রভাব নিয়ে একটি প্রাথমিক আলোচনা। বইটি তাদের গল্প বলে; যারা ইসলামের ধ্রুপদি জ্ঞানচর্চা ও পাণ্ডিত্যের ঐতিহ্যের সাথে যুক্ত আছেন।

আরও পড়ুন আসছে আরফান হোসাইন রাফির প্রথম কাব্যগ্রন্থ জুলাই আন্দোলনের গান নিয়ে বই

বইটির লেখক ইব্রাহিম মূসা তাঁর ইসলামি শিক্ষার ভিত গড়েছেন ভারতের দুই বিখ্যাত ইসলামি বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম দেওবন্দ ও নদওয়াতুল উলামায়। যুক্তরাজ্যে সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও থিতু হয়েছেন গবেষণা ও শিক্ষকতায়। কেপটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি শেষে সেখানে ইসলামিক স্টাডিজ পড়িয়েছেন বেশ কিছুদিন। অধ্যাপনা করেছেন ডিউক ও স্ট্যানফোর্ডের মতো প্রখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে।

২০১৪ সাল থেকে অধ্যাপনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে তিনি সেখানকার ইসলামিক থট অ্যান্ড মুসলিম সোসাইটিজের ‘মির্জা ফ্যামিলি অধ্যাপক’। ধর্মতত্ত্ব ও ইতিহাসের শিক্ষক হলেও ইসলামি নীতিশাস্ত্র, আইন, দর্শন ও আধুনিকতা নিয়ে গবেষণার জন্য বিশ্বব্যাপী তাঁর সুখ্যাতি আছে। ইব্রাহিম মূসাকে বিশ্বের প্রভাবশালী ৫০০ মুসলিম ব্যক্তিত্বের মধ্য থেকে একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। ভারতীয় উপমহাদেশের মাদরাসা শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরিচালিত ‘মাদরাসা ডিসকোর্স’ নামের একটি শিক্ষাপ্রকল্পের নেতৃত্বে আছেন তিনি।

২০০৫ সালে প্রকাশিত ইব্রাহিম মূসার ‘গাজালি অ্যান্ড দ্য পয়েটিকস অব ইমাজিনেশন’ গ্রন্থটি ২০০৬ সালে আমেরিকান একাডেমি অব রিলিজিয়নের সেরা প্রথম গ্রন্থ হিসেবে পুরস্কার লাভ করে।

লেখক মোহাম্মদ বশির উদ্দিনের অনুবাদ করা ‘হোয়াট ইজ এ মাদরাসা’ বইটি বাংলাদেশের অভিজাত বইয়ের দোকানসহ অনলাইন বই বিক্রির প্ল্যাটফর্ম রকমারি ডটকমেও পাওয়া যাচ্ছে।

এসইউ/এএসএম