ধর্ম

সফর মাস যেভাবে হতে পারে বরকতময়

সফর হিজরি সালের দ্বিতীয় মাস। তিনটি হারাম বা যুদ্ধ-নিষিদ্ধ মাস অর্থাৎ জিলকদ, জিলহজ ও মহররমের পরের মাসটি সফর। সফর অর্থ শূন্য বা খালি। ইসলামপূর্ব যুগে আরবরা বিরতির পর এই মাসে আবার যুদ্ধ-বিগ্রহে বা সফরে বের হয়ে যেতো। শহরগুলো হয়ে যেতো অধিবাসী শূন্য। এ কারণে এই মাসের নাম ‘সফর’ রাখা হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।

জাহেলি যুগে আরবরা মনে করতো, সফর অশুভ মাস। এ মাসে বিপদ-আপদ আসে, যুদ্ধ-বিগ্রহ হয়। ইসলামের আবির্ভাবের পর রাসুল (সা.) এ ধারণা বাতিল করে দিয়ে বলেন, শুভ-অশুভ লক্ষণ বলে কিছু নেই। পেঁচায় কুলক্ষণ নেই এবং সফর মাসে অকল্যাণ নেই। (সহিহ বুখারি: ৫৭৫৭)

ইসলামের দৃষ্টিতে সব সময়ই ভালো ও বরকতময়। মানুষের খারাপ কাজে সময় খারাপ হতে পারে। সময় নিজে নিজে অশুভ বা অকল্যাণকর হতে পারে না।

রাসুল (সা.) সময়কে মন্দ বলতে বা গালি দিতে নিষেধ করে বলেছেন, তোমরা কেউ যেন সময়কে গালি না দাও, কারণ আল্লাহই সময়। (সহিহ মুসলিম: ৫৮২৭)

অর্থাৎ সময়ের স্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রক আল্লাহ নিজেই। যা হয়, আল্লাহর ইচ্ছায় হয়। সময় অশুভ হয় না বা সময়ের কোনো ক্ষমতাও নেই।

ইসলামের ইতিহাসে মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সাফল্য ও বিজয় অর্জিত হয়েছিল সফর মাসে। সপ্তম হিজরির সফর মাসে নবিজির (সা.) নেতৃত্বে মুসলমানরা খায়বার বিজয় করে। ষোড়ষ হিজরির সফর মাসে হজরত ওমরের (রা.) খেলাফতকালে মুসলমানরা পারস্য বা সসনীয় সাম্রাজ্যের রাজধানী মাদায়েন বিজয় করে।

অন্য সব মাসের মতো সফর মাসেও ইবাদত ও নেক আমলের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি। প্রতি চন্দ্রমাসের মধ্যবর্তী তিন দিন অর্থাৎ ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রোজা রাখা মুস্তাহাব। সফর মাসেও রোজাগুলো আমরা রাখতে পারি।

মিলহান আল কায়সী (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমাদের আইয়ামে বিজ অর্থাৎ তেরো, চৌদ্দ ও পনেরো তারিখে রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন এবং বলতেন এটি সারাবছর রোজা রাখার সমান। (সুনানে আবু দাউদ: ২৪৪৯)

রাসুল (সা.) প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। এ রোজাগুলোও আমরা রাখতে পারি। এ ছাড়া নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত ও আল্লাহর স্মরণের মাধ্যমে সফর মাসের দিনগুলোকে বরকতময় করে তুলতে পারি।

ওএফএফ/এমএস