আজকাল ছোট্ট ছেলে-মেয়েদের একাকীত্ব যেন অনেকের চোখে পড়ে না। বাবা-মা দু’জনই দিনে ব্যস্ত থাকেন – কাজের চাপ, অফিসের রুটিন। তারপর বিভিন্ন স্ক্রিন কেড়ে নিচ্ছে পারিবারিক সময়।
অনেক সময় শিশুর শুধু শারীরিক স্বাস্থ্যের দিকেই খেয়াল করা হয়, মনের খবর নেওয়া হয়না। কিন্তু শিশুর মানসিক অবস্থার দিকে মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
তাই দিনশেষে সন্ধ্যার সেই ছোট্ট সময়টায় অন্য সব ভুলে আপনার শিশুকে জিজ্ঞেস করুন এই ৫টি প্রশ্ন- ১. সারাদিন কী কী করলে?আপনার সন্তানের দিন কীভাবে কাটলো সেটি জানার সহজ উপায় এই প্রশ্নটি। সাধারণত যেকোনো বয়সের শিশুই এই প্রশ্নের উত্তরে তাদের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী ঘটনাগুলো আপনাকে বলবে। এই তথ্যগুলো থেকে আপনি শিশুর বেড়ে ওঠার দিকে যেমন নজর রাখতে পারবেন, তেমনি কারা তার সঙ্গে কেমন আচরাণ করে তাও জানতে পারবেন। এটি শিশুর নিরাপত্তার জন্য খুব জরুরি।
আবার স্কুলে কী কী হয়, বন্ধুদের সঙ্গে আপনার শিশুর সময় কেমন কাটে – সেসবও জানতে পারা যাবে। প্রতিদিনের ছোট আনন্দগুলো বুঝতে পারলে শিশুর সঙ্গে আপনার বন্ধন আরও মজবুত হবে।
ছোটখাটে ভালো লাগার বা না লাগার ঘটনা সবার জীবনেই ঘটে, প্রতিদিন। কিন্তু দিনশেষে যেগুলো মনে থেকে যায়, সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ। তাই শিশুর আবেগের দরজা খুলবে এই প্রশ্ন। কারও সঙ্গে ঝগড়া, স্কুলে কোনো সমস্যা, কোন কিছু না পাওয়া নিয়ে মন খারাপ – এই ধরনের অনুভূতিগুলো চাপা না দিয়ে সহজভাবে শেয়ার করতে শিখবে আপনার সন্তান।
সেই সঙ্গে এই প্রশ্নের উত্তরে যদি আপনার শিশু কোনো ব্যক্তিকে অপছন্দ করার কথা বলে, বা তাদের সঙ্গে আর দেখা করতে চায়না – এমন কিছু বলে, তাহলে আরো প্রশ্ন করুন। অনেক সময় শিশুরা খারাপ লাগার কথা খুলে বলার ভাষা খুঁজে পায়না। তখন আরও প্রশ্ন করে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করুন। এটি সন্তানের নিরাপত্তার জন্য আবশ্যক। সন্তানকে অবিশ্বাস করবেন না।
৩. আজকের দিনের কোনো ঘটনা কি তুমি বদলাতে চাও?এই প্রশ্ন শিশুর মধ্যে আত্মবিচার এবং পরিবর্তন সম্পর্কিত ধারণার বিকাশ ঘটায়। এর উত্তর ভাবতে গিয়ে শিশু নিজের কর্মকাণ্ডকে মূল্যায়ন করবে, এটি তার ভবিষ্যতের জন্য একটি সম্পদ। আবার এর উত্তরের মধ্য দিয়ে আপনি জানতে পারবেন আপনার সন্তানের সঙ্গে কেউ কোন অসদাচরণ করেছে কিনা।
৪. আগামীকালকের জন্য তোমার প্ল্যান কী?শিশুকে পরের দিনের পরিকল্পনায় মনোনিবেশ করাতে সাহায্য করে এই প্রশ্ন। এটি সময় ব্যবস্থাপনা শেখায়, এবং রুটিন গড়ে নিতে উদ্দীপনা দেয়।
শিশুরা অনেকসময় এমন অনুভব করলেও ভাষায় দক্ষতার অভাবে এই বিষয়টি প্রকাশ করতে পারেনা, এবং তার মধ্যে বঞ্চনা তৈরি হয়। এই প্রশ্নটি শিশুর মনের অনুভূতি প্রকাশের সুযোগ করে দেয়।
কেন করবেন এই প্রশ্নগুলো?>> সংবেদনশীলতা বাড়ায়: শিশু জানে যে, তার অনুভূতিকে পুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
>> আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলে: শিশু নিজের অনুভূতিগুলো শেয়ার করার আত্মবিশ্বাস পায়।
>> পরিবারে সমঝোতা বাড়ায়: বাবা-মায়ের সঙ্গে শিশুর সম্পর্ক দৃঢ় হয়।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
এএমপি/জিকেএস