আন্তর্জাতিক

মারা গেছেন ভাইরাল ‘দয়ালু বিচারক’ ফ্রাঙ্ক ক্যাপ্রিও

জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান ‘কট ইন প্রভিডেন্স’-এর বিচারক ফ্রাঙ্ক ক্যাপ্রিও মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।

অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘদিনের লড়াই শেষে গত বুধবার (২০ আগস্ট) ফ্রাঙ্ক ক্যাপ্রিও মারা যান বলে তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, মানুষের প্রতি সহানুভূতি, বিনয় এবং মানবিকতায় বিশ্বাসের জন্য প্রিয় এই বিচারক আদালতে ও তার বাইরেও কোটি মানুষের জীবন স্পর্শ করেছেন। তার আন্তরিকতা, রসবোধ ও সদয় আচরণ তাকে যারা চিনতেন তাদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী ছাপ ফেলেছে।

স্থানীয় টেলিভিশনের মাধ্যমে দর্শক ক্যাপ্রিওকে প্রথম দেখেন প্রভিডেন্স শহরের আদালতে ট্রাফিক ও পৌর আইন ভঙ্গ সংক্রান্ত মামলার বিচার করতে। পরে তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে লায়নসগেটের ডেবমার-মারকারি বিভাগ অনুষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সম্প্রচার করে। ২০১৮ সাল থেকে দুই মৌসুম চলা এই অনুষ্ঠান প্রযোজনা করেছিলেন প্রভিডেন্সের বাসিন্দা ও গায়িকা পাওলা আবদুল। অনুষ্ঠানটি ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে ডে-টাইম এমি অ্যাওয়ার্ডে মনোনীত হয়েছিল।

      View this post on Instagram

A post shared by Judge Frank Caprio (@therealfrankcaprio)

ডেবমার-মারকারির সহসভাপতি মর্ট মার্কাস ও আইরা বার্নস্টাইন এক বিবৃতিতে বলেন, বিচারপ্রক্রিয়ায় সহানুভূতি ও সাধারণ জ্ঞানের অনন্য মিশ্রণ তাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও টিভির দর্শকের প্রিয় করে তুলেছিল। আমরা তাকে গভীরভাবে মিস করবো।

কর্মজীবনে ফ্রাঙ্ক ক্যাপ্রিও ‘বিশ্বের সবচেয়ে দয়ালু বিচারক’ নামেও পরিচিত ছিলেন।

ফ্রান্সেসকো ক্যাপ্রিও ১৯৩৬ সালের ২৪ নভেম্বর প্রভিডেন্সে জন্মগ্রহণ করেন। ফল বিক্রেতা এক অভিবাসী পরিবারের সন্তান তিনি। ১৯৫৮ সালে প্রভিডেন্স কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করার পর শিক্ষকতা করতে করতে রাতের ক্লাসে আইন পড়েন এবং বোস্টনের সাফোক ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ল’ থেকে আইন ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৮৫ সালে তিনি প্রভিডেন্স মিউনিসিপাল কোর্টের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রধান বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একই বছর তিনি অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার কথা ঘোষণা করেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার জনপ্রিয়তাও ছিল ব্যাপক। ফেসবুকে তার অনুসারী ৩৪ লাখ, ইনস্টাগ্রামে ৩৩ লাখ, টিকটকে ১৬ লাখ। মৃত্যুর আগের দিনও হাসপাতালের শয্যা থেকে তিনি ভক্তদের উদ্দেশে পোস্ট করেছিলেন, আমাকে শেষবারের মতো প্রার্থনায় মনে রাখবেন।

রোড আইল্যান্ডের গভর্নর ড্যান ম্যাকি এক্স (টুইটার)-এ তাকে ‘রোড আইল্যান্ডের গর্ব’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং তার সম্মানে অঙ্গরাজ্যের পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

তার ছেলে ফ্রাঙ্ক ক্যাপ্রিও জুনিয়র বলেন, আমার বাবা সবসময় দানশীল ছিলেন, অন্যকে সাহায্য করতেই বেঁচে থাকতেন। তার সহানুভূতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। আমরা যদি ভালো কাজ চালিয়ে যাই, তার উত্তরাধিকার বেঁচে থাকবে।

সূত্র: দ্য হলিউড রিপোর্টারকেএএ/