শিক্ষা

বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে পাঠ্যবই ছাপাতে দিলে এনসিটিবি বন্ধের হুঁশিয়ারি

পাঠ্যবই ছাপার কাজ বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক উইং। একই সঙ্গে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার পাঁয়তারা বন্ধের দাবি জানিয়েছে তারা।

রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মতিঝিলে এনসিটিবি কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এমন হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এসময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। ‘শ্রমিক মরবে মানি না, বিদেশি ছাপা চাই না’, ‘দুনিয়ায় মজদুর, এক হও লাড়াই করো’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘বিদেশি কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ সহ নানান স্লোগান দেন।

কর্মসূচিতে শ্রমিং উইংয়ের কেন্দ্রীয় নেতা হাসান বলেন, আমাদের দেশের লাখ লাখ শ্রমিক বেকার, ঠিকমতো তারা খেতে পারেন না। গত বহু বছর ধরে বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাদের শ্রমিকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমরা আর এসব মেনে নেবো না। দেশের কাজ দেশেই রাখতে হবে।

সংগঠনের নেতা মেহেদী হাসান বলেন, আমাদের দেশে কি দক্ষ জনবল নেই যে নিজের দেশের কাজ বিদেশিদের দিতে হবে? দেশের শ্রমিকরা কাজ না পেয়ে অসহায় দিন পার করছেন। অথচ এদিকে বিদেশে কাজ দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা এসব মানবো না।

এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের মুখ্য সংগঠক শিপন বলেন, রাষ্ট্রের সংবিধান পরিবর্তন করে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। কারণ বিভিন্ন শ্রমিক নেতা ও ব্যবসায়ীরা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। আগে সংস্কার, তারপর নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। এই সরকার যদি আমাদের কথা না শোনে তাহলে বুঝতে হবে বিদেশিদের হাতে কাজ দিয়ে আবার বড় অংক পাচার করা হবে।

আরও পড়ুন

বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যের শিকার ৪১.৯% শিক্ষার্থী, বেশি পরীক্ষায় একাদশে ভর্তিতে শেষ ধাপে আবেদন শুরু, সময় দুদিন

কেন্দ্রীয় শ্রমিক উইংয়ের প্রধান সমন্বয়কারী মাজহারুল ইসলাম বলেন, শত শত শ্রমিক চব্বিশের অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন। তারা যে নতুন বন্দোবস্তের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন সেটা বাস্তবায়ন হয়নি। বরং মালিকপক্ষের বন্দোবস্ত ঠিকঠাক মতো হয়েছে। দেশের লাখ লাখ শ্রমিক বেকার। তাদের বঞ্চিত করে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার পাঁয়তারা রয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শ্রমিকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। আমরা এসব সিদ্ধান্ত মেনে নেবো না। শ্রমিকের রুটি-রুজির হক অন্য দেশের হাতে তুলে দিতে চাই না আমরা।

তিনি আরও বলেন, বিদেশিদের হাতে কাজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা না হলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেবো। দ্রুতই সেটি বাস্তবায়ন করা না হলে এনসিটিবি ভবনের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।

কর্মসূচিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাসহ পুস্তক শাখার অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

তবে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণে আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বানের বিষয়টি সঠিক নয় বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সংস্থাটির সচিব প্রফেসর মো. সাহতাব উদ্দিনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি কিছু প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় তথ্যের সঠিকতা যাচাই না করে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণে আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত খবরের যথার্থতা না থাকায় এ ধরনের সংবাদে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।

এএএইচ/কেএসআর/এমএস