বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকা টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতালে ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া ৪৮ ঘণ্টার এ কর্মসূচিতে সব ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।
বাগেরহাট মহাসড়কের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে, খুলনা-ঢাকা মহাসড়কের দশানী, নওয়াপাড়া, কাটাখালি, মোল্লাহাট সেতু, বাগেরহাট পিরোজপুর মহাসড়কের সাইনবোর্ড বাজার, খুলনা মোংলা মহাসড়কের ফয়লা, মোংলা বাসস্ট্যান্ডসহ জেলার অন্তত ৫০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সড়কের ওপর গাড়ি, গাছের গুঁড়ি ও বেঞ্চ রেখে অবরোধ করছেন সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা। ফলে পণ্য পরিবহন থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও রোগীবাহী অ্যাম্বুল্যান্স চলাচলে মারাত্মক জনদুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।
সকাল ৮টায় জরুরি প্রয়োজনে পিরোজপুর থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হন আনোয়ার হোসেন (৫০)। বাগেরহাটের সীমানায় আসার পর বাঁধে বিপত্তি। বন্ধ সব ধরনের যান চলাচল। কখনো পায়ে হেঁটে কখনো বা রিকশা-ইজিবাইকে তিনগুণ ভাড়া দিয়ে দেড় ঘণ্টার পথ চার ঘণ্টায় পৌঁছেছেন তিনি। আনোয়ার বলেন, ৬ জায়গায় রিকশা-ইজিবাইক পরিবর্তন করে গন্তব্যে এসেছি। এরচেয়ে ভোগান্তি আর কিছু হতে পারে না।
বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডের আবাসিক হোটেল সুইট প্যালেসের ম্যানেজার মিজান মল্লিকের বলেন, ‘হরতালের জন্য অফিস-আদালত, রাস্তাঘাট, দোকানপাট, ব্যবসাবাণিজ্য সবকিছু বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হোটেলে একজন কাস্টমারও আসেনি। শুনেছি সামনে আরও বেশি আন্দোলন হবে। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্য সব মুখ থুবড়ে পড়বে।’
রিকশাচালক জাহিদ হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৭০ টাকা আয় করছি। রাস্তায় কোনো লোকজন নেই। মহাজনের ভাড়াই আছে আড়াইশো টাকা। বের হয়ে বিপদে পড়েছি। বাজার করব কি দিয়ে আর ভাড়াই বা দিবো কীভাবে।’
দুর্ভোগের বিষয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সম্মিলিত কমিটির কোকনভেনর এম এ সালাম বলেন, দুর্ভোগ আমাদেরও কাম্য নয়। নির্বাচন কমিশনের খামখেয়ালি সিদ্ধান্তের কারণে মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। তবে এটি জেলার প্রতিটি মানুষের দাবি। সবাই মিলেই আমরা আন্দোলন করছি।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত এ হরতাল চলবে।
নাহিদ ফরাজী/আরএইচ/এমএস