লাইফস্টাইল

পাল্টে যাচ্ছে শোনার অভ্যাস

সকালে হাঁটার সময়, অফিস যাত্রায় বা ঘুমানোর আগে — কানে হেডফোন গুঁজে এখন অনেকেই শুনছেন প্রিয় অনুষ্ঠান। টেলিভিশন বা এফএম রেডিওর বাইরে যেন এক নতুন জগৎ খুলে দিয়েছে পডকাস্ট।

আজ (৩০ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক পডকাস্ট দিবস উপলক্ষে চলুন ভেবে দেখি কীভাবে পাল্টে গেলো আমাদের শোনার অভ্যাস।

পডকাস্টের ছোট্ট ইতিহাস

পডকাস্ট জিনিসটার বয়স খুব বেশি না। কুড়িও পেরোয়নি এখনো। ২০০৪ সালে এমটিভির প্রাক্তন ভিডিও জকি অ্যাডাম কারি আর সফটওয়্যার ডেভেলপার ডেভ উইনার এমন এক প্রযুক্তি তৈরি করেন, যাতে আরএসএস ফিডের মাধ্যমে অডিও ফাইল সাবস্ক্রাইব করে শোনা যায়।

পরে ২০০৫ সালে অ্যাপল যখন আইটিউনস্-এ পডকাস্ট যুক্ত করে, তখনই জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে। তখনই জন্ম নিল পডকাস্ট শব্দটি। আইপডের ‘পড’ আর ব্রডকাস্টের ‘কাস্ট’ মিলে হয়ে গেল পডকাস্ট। তবে ২০১৪ সালে ক্রাইম সিরিজ ‘সিরিয়াল’ এলো এক বড় বাঁক বদল নিয়ে, আর সেখান থেকেই মূলধারায় ঢুকে গেল পডকাস্ট।

বদলে যাওয়া শ্রোতার অভ্যাস

আগে মানুষকে নির্দিষ্ট সময়ে রেডিও চালাতে হতো অনুষ্ঠান শোনার জন্য। এখন আর সময়ের বাঁধন নেই। বাসে, ট্রেনে, হাঁটার সময় কিংবা রান্নাঘরে কাজের ফাঁকেই মানুষ শুনে ফেলছে প্রিয় এপিসোড। খবর, শিক্ষা, বিনোদন, মোটিভেশন—যে যেটা চাইছে, সেটাই পছন্দমতো শুনে নিচ্ছে। বাংলাদেশেও তরুণদের মধ্যে পডকাস্ট শোনার প্রবণতা বাড়ছে, বিশেষ করে শিক্ষা ও ক্যারিয়ারভিত্তিক অনুষ্ঠানের জনপ্রিয়তা তুলনামূলক বেশি।

পডকাস্টের সুবিধা

>> যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায় শোনা যায়

>> নিজের আগ্রহ অনুযায়ী বেছে নেওয়া যায়

>> শিক্ষা, বিনোদন, খবর—সবকিছু একসঙ্গে পাওয়া যায়

>> ফ্রি বা কম খরচে শোনা সম্ভব

পডকাস্টের অসুবিধা

>> ইন্টারনেট না থাকলে সহজে শোনা যায় না

>> মানসম্মত কনটেন্ট খুঁজে পাওয়া সবসময় সহজ নয়

>> দীর্ঘ এপিসোডে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হতে পারে

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা

ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা আর স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে পডকাস্টের শ্রোতা আগামী দিনে আরও বাড়বে। কারণ, গল্প, জ্ঞান আর তথ্যের এক নতুন আড্ডাখানা হয়ে উঠছে পডকাস্ট। সেইসঙ্গে মানুষের আড্ডা ও যোগাযোগকে যেন নতুন এক রূপ দিচ্ছে এই পডকাস্ট।

তথ্যসূত্র: বিবিসি নিউজ, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস, স্ট্যাটিসটা রিপোর্ট (২০২৪)

এএমপি/এএসএম