আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন ঘিরে ট্রাম্প শিবিরে উত্তেজনা, পাল্টাপাল্টি দোষারোপ

যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন ঘিরে ট্রাম্প শিবিরে উত্তেজনা, শুরু হয়েছে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ। শাটডাউনের জেরে ফেডারেল সরকারের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। মার্কিন কংগ্রেসে বাজেট বিল পাস না হওয়ায় মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাত থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

দেশটিতে ২০১৯ সালের পর এই প্রথম অর্থায়ন সংকটের কারণে লাখো সরকারি কর্মী বাধ্যতামূলক ছুটিতে বা বিনা বেতনে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।

কারা ক্ষতিগ্রস্ত

শাটডাউন দিয়ে সরকারের সম্পূর্ণ অচলাবস্থা নির্দেশ করলেও কিছু জরুরি সেবা চালু রয়েছে। সোশ্যাল সিকিউরিটি, মেডিকেয়ার ও মেডিকেইডের জন্য অর্থ সরবরাহ বন্ধ হয়নি। তবে বিনা বেতনে কাজ করছেন আকাশপথ কর্মকর্তা, টিএসএ এজেন্ট, জাতীয় আবহাওয়া দপ্তরের কর্মীরা। ভেটেরান স্বাস্থ্যসেবা ও পাসপোর্ট প্রক্রিয়াকরণ চালু থাকলেও জাতীয় উদ্যানের ৪৩০টিরও বেশি সাইট বন্ধ হয়ে গেছে। স্থগিত রয়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসা ও বাড়ি ক্রেতাদের জন্য ফেডারেল ঋণ কার্যক্রম। অভিবাসন আদালতের বিভিন্ন মামলার শুনানি স্থগিত হওয়ায় মামলার জট আরও বাড়বে।

আরও পড়ুন>>যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ বার শাটডাউন, ট্রাম্পের আমলেই ২ বারযুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন: ছাঁটাই-অবৈতনিক ছুটিতে বাধ্য হাজারও কর্মীশাটডাউনের সময় ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন করলে বরখাস্ত করবেন ট্রাম্প

দোষারোপের রাজনীতি

শাটডাউনের পর থেকেই রাজনৈতিক দোষারোপ শুরু হয়েছে। হাউজ স্পিকার রিপাবলিকান নেতা মাইক জনসন বলেন, ডেমোক্র্যাটরা সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে মা-শিশুরা পুষ্টি সুবিধা হারাচ্ছে, ভেটেরানরা স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না। হোয়াইট হাউজের সরকারি ওয়েবসাইটে ‘ডেমোক্র্যাটরা সরকার বন্ধ করেছে’ শিরোনামে একটি লাইভ শাটডাউন ঘড়ি দেখানো হচ্ছে। বিপরীতে, শাটডাউনের জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রিপাবলিকানদেরই দায়ী করেছেন ডেমোক্র্যাটরা। কারণ, তারা হোয়াইট হাউজ, সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদ—তিন জায়গাতেই ক্ষমতায় রয়েছে।

সিনেট মেজরিটি লিডার চাক শুমার ও হাউজ মাইনরিটি লিডার হাকিম জেফরিজ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, রিপাবলিকানরা আমেরিকানদের স্বাস্থ্যসেবা রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। তাই তারাই শাটডাউনের জন্য দায়ী। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, এটি রিপাবলিকানদের শাটডাউন।

ট্রাম্পের দ্বৈত অবস্থান

এদিকে, ট্রাম্প শাটডাউন প্রসঙ্গে দুই ধরনের কথাই বলেছেন। একদিকে তিনি বলেন, আমরা মোটেও শাটডাউন চাই না। আবার তিনিই মন্তব্য করেন, শাটডাউনের মাধ্যমে আমরা অনেক অপ্রয়োজনীয় ব্যয় থেকে মুক্তি পেতে পারি।

তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে শাটডাউনকে ব্যবহার করছেন ট্রাম্প। শাটডাউন দীর্ঘস্থায়ী হলে বাজার ও কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

জনমতই হবে নির্ধারক

বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতি নির্ভর করবে জনগণ কাকে দায়ী করে তার ওপর। ইতিহাসে দেখা গেছে, অনমনীয় ও আপসহীন পক্ষই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবার যেহেতু সব কিছুর ওপর রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে , তাই তাদের জন্য দায় এড়ানো কঠিন হবে।

সূত্র: সিএনএনকেএম/কেএএ/