গাজামুখী সুমুদ ফ্লোটিলায় হানা দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যাচ্ছে। ফ্লোটিলা থেকে এরই মধ্যে দুই শতাধিক কর্মী-সামাজিক আন্দোলনকারীকে বন্দি করেছে ইসরায়েল। গাজার অবরোধ ভেঙে মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে যাওয়া এই বহরে ৪০টিরও বেশি জাহাজ ছিল।
জানা যায়, ইসরায়েলি নৌবাহিনী ফ্লোটিলার জাহাজগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়, জলকামান ছুড়ে আক্রমণ চালায় এবং আন্তর্জাতিক জলসীমায় সক্রিয় কর্মীদের আটক করে। ঘটনাটি বিশ্বব্যাপী তীব্র নিন্দার ঝড় তোলে।
আরও পড়ুন>>সুমুদ ফ্লোটিলায় ইসরায়েলি হানা, কেমন আছেন শহিদুল আলম?গাজামুখী সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে ৩৭ দেশের দুই শতাধিক কর্মীকে বন্দি করেছে ইসরায়েলফ্লোটিলায় হানার কড়া জবাব/ কলম্বিয়ায় ইসরায়েলের সব কূটনীতিক বহিষ্কার
মালয়েশিয়ামালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে ‘ভীতি প্রদর্শন ও জবরদস্তি’ আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গাজায় খাদ্য ও জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়া নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের বাধা দিয়ে ইসরায়েল মানবতার প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছে। ফ্লোটিলার আটক হওয়া ১৩টি জাহাজে ১২ জন মালয়েশীয় নাগরিকও রয়েছেন।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলাকে ফ্যাসিবাদী ও সামরিকতাবাদী নীতির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা আটক হওয়া তুর্কি নাগরিকদের মুক্তির দাবিতে আইনি পদক্ষেপ নেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
আয়ারল্যান্ডআয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস ঘটনাটিকে শান্তিপূর্ণ মানবিক উদ্যোগের ওপর হামলা আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ফ্লোটিলার সদস্যদের আন্তর্জাতিক আইন মেনে আচরণ করতে হবে। একই সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ফ্লোটিলায় থাকা আইরিশ নাগরিকদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
ইউরোপইউরোপীয় পার্লামেন্টের ফরাসি সদস্য এমা ফুরো বিশ্বব্যাপী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইসরায়েলকে অবরুদ্ধ করো, বৈশ্বিক অর্থনীতি পঙ্গু করে দাও, গাজার অবরোধ ও গণহত্যা শেষ করো।
এমা নিজেও ফ্লোটিলার একটি জাহাজে অবস্থান করছেন।
গাজামুখী ফ্লোটিলায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন বড় শহরে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে আন্দোলনকারীরা আটক হওয়া কর্মীদের মুক্তি দাবি করেন। ইসরায়েলের হাতে আটক হওয়া জাহাজগুলোর একটিতে রয়েছেন আর্জেন্টাইন আইনপ্রণেতা সেলেস্ট ফিয়েরো।
বিক্ষোভ হয়েছে আঙ্কারা, মেক্সিকো সিটি, বোগোতা, এবং মাদ্রিদের রাস্তায়ও। তারা ইসরায়েলের হামলা ও কর্মী আটককে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা গাজার মানুষের জন্য অবরোধ ভাঙতে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোরও দাবি জানান।
ইসরায়েলি হামলার পর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের মানবিক মিশন থেমে থাকবে না।
সূত্র: আল-জাজিরাকেএএ/