দেশজুড়ে

আধা কিলোমিটার সড়কের অভাবে কাজে আসছে না ৯ কোটির সেতু

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় পুকুরিয়া এলাকায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। দৃশ্যত প্রগতির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও মাত্র আধা কিলোমিটার সেতুর সংযোগ সড়ক পাকা না হওয়ায় কোটি টাকা খরচ করা সেতুটি কোনো কাজে আসছে না।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর পশ্চিম পাশের মাত্র আধা কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এখনও পাকাকরণ হয়নি। আর কাঁচা সড়কটি খানাখন্দে ভরা।

স্থানীয়রা জানায়, বর্ষাকালে এই সড়কটি আরও বেহাল হয়ে পড়ে। যা ব্যবহার করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। ফলে এ অংশ দিয়ে যানবাহন বা মানুষ চলাচল করতে পারেন না। তখন তারা বাধ্য হয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ আলী বলেন, সেতুটি তৈরির সময় আমরা খুব আশাবাদী ছিলাম। ভেবেছিলাম, এলাকার মানুষ অনেক উপকার পাবে। কিন্তু রাস্তা না থাকায় এখন এটি যেন নির্জন একটা স্থাপনা হয়ে আছে। আমরা চাই দ্রুত এই আধা কিলোমিটার সড়ক পাকা করা হোক।

ওই এলাকার বাসিন্দা সালমা খাতুন বলেন, ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যাওয়া-আসাও এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বর্ষাকালে তো সড়কটি ব্যবহারই করা যায় না। নদীর ওপারে পুকুরিয়া কলেজ কানসাট উচ্চ বিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। কিন্তু এখনো ছেলে মেয়েদের স্যান্ডেল খুলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ২০২১-২২ অর্থবছরে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এটি নির্মাণে প্রায় ৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়। তবে সংযোগ সড়কটি প্রকল্পের আওতায় ছিল কি-না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তাদের মতে, সেতু নির্মাণের আগে এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা করা উচিত ছিল।

আলি হাসান নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, আমি কানসাটে আমের ব্যবসা করি। তাই এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করতে হয়। কিন্তু পুকুরিয়া এলাকার ব্রিজ হয়েছে কিন্তু সংযোগ সড়ক হয়নি। তাই ব্রিজের উপরে ধান, গোবর ও পাটকাঠি শুকাতে দেন স্থানীয়রা। এটি দুঃখজনক।

আরও পড়ুনশরতের বৃষ্টিতেও ঢাকায় জলাবদ্ধতা, কাজে আসছে না কোনো উদ্যোগবছরের পর বছর যায় সড়কের দুর্ভোগ কাটে না

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, সংযোগ সড়কটি পাকাকরণের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছেন। তবে কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সূচী নেই।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শুধুমাত্র সেতু নির্মাণ করলেই উন্নয়ন হয় না। তা তখনই বাস্তব রূপ নেয়, যখন সেতুর সঙ্গে সংযোগ সড়কসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত সুবিধাও নিশ্চিত করা হয়। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি পাকা করে সেতুটি জনগণের কাজে লাগানোর দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রকল্প অনুমোদনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সড়কটি পাকা করাৃ হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আজাহার আলী বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আছে ব্রিজের সঙ্গে সংযোগ সড়ক পাকা করার জন্য প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।

সোহান মাহমুদ/এনএইচআর/জিকেএস