দেশজুড়ে

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রম, আতঙ্কে কর্মীরা

ভবনের দেওয়ালে বড় ফাটল। ভেতরের রডও বেরিয়ে গেছে অনেক জায়গায়। বাইরে থেকে রং করা হলেও ভেতরে সবখানে জীর্ণ দশা। কর্মীদের অফিস কক্ষ, রান্নাঘর এমনকি থাকার ঘরেও ফাটল দেখা দিয়েছে। যদিও ২০২০ সালে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। তারপরও ব্যবহারের অনুপযোগী ওই ভবনে চলছে মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কার্যক্রম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৬ সালে মাদারীপুর পৌরসভার কুকরাইল মৌজায় ফায়ার সার্ভিসের এই দোতলা ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে কয়েকবার সংস্কার করা হলেও বর্তমানে এটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভবনটি বাইরে থেকে রঙ ও প্লাস্টারের কারণে চকচকে দেখালেও ভেতরের অবস্থা জীর্ণ। ভবনের বিভিন্ন জায়গায় ঢালাইয়ের ভেতর থেকে রড বেরিয়ে গেছে। অফিসকক্ষ, রান্নাঘর, ডাইনিং রুম এবং থাকার ঘর-সবখানেই বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। কর্মীদের মাথার ওপর প্রায়ই পলেস্তারা খসে পড়ছে।

ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকজন কর্মী জানান, তারা যেখানে মানুষের জীবন রক্ষার জন্য কাজ করছেন, সেখানে তাদের নিজেদের জীবনই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তারা দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর শেখ আহাদুজ্জামান বলেন, প্রায় পাঁচ বছর আগে আমাদের এই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলেও এখন পর্যন্ত এখানে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়নি। অনেক সময় আমাদের মাথার ওপর পলেস্তারা খসে পড়ে। এর মধ্যে থেকেই আমাদের কাজ করে যেতে হচ্ছে।

মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সালে এই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। এরপর বেশ কয়েকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নতুন ভবন নির্মাণের ব্যাপারে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোন ফল পাইনি। তবে আশা করা যাচ্ছে শিগ্‌গিরই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারটি দেখবেন।

এদিকে মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসে নৌ দুর্ঘটনায় ডুবুরি কাজের জন্য মোট ৬ জন ডুবুরি ছিলেন। এর মধ্যে দুইজন বর্তমানে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসে ডেপুটেশনে আছেন। বাকি চারজন দিয়ে মাদারীপুরের কাজ চললেও, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জে ডুবুরি না থাকায় প্রয়োজনে তাদের সেখানেও যেতে হয়। ডুবুরিদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা না থাকায় তাদের যাতায়াতে সমস্যা হয়। এছাড়া নিজস্ব নৌকা না থাকায় উদ্ধার কাজ ব্যাহত হয়। কাজের সুবিধার জন্য একটি নৌকা প্রয়োজন বলে ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলছেন, ডুবুরি কাজের জন্য মাদারীপুরে ৬ জন ডুবুরি ছিলো। সেখান থেকে দুই জনকে ফরিদপুরে ডেপুটেশনে নেওয়া হয়েছে। বাকী চার জন মাদারীপুরে কর্মরত আছেন। এই চারজন দিয়ে মাদারীপুরের কাজ ভালোভাবেই করা যায়। তবে বড় ধরনের দুর্ঘটনা হলে ঢাকা থেকে ডুবুরি আনা হয়। এছাড়া শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জে কোনো ডুবুরি না থাকায় প্রয়োজন হলে মাদারীপুর থেকে ডুবুরিরা গিয়ে কাজ করছেন।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/কেএইচকে/এএসএম