লাইফস্টাইল

৩ রাত কম ঘুমালে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে!

প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম সবার জন্যই জরুরি। ঘুম শরীর ও মনের ভারসাম্য রক্ষা করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যদিও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুমের সময় কিছুটা কমে যায়। এছাড়া বর্তমানে ব্যস্ততা, কাজের চাপ, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের কারণে অনেকেই দিনে ৩-৪ ঘণ্টার বেশি ঘুমাতে পারেন না। এমন পরিস্থিতি দিনের পর দিন চলতে থা্কলে মানুষের শরীর ও মস্তিষ্কের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।

সম্প্রতি সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানান, কেউ যদি টানা তিন দিন চার ঘণ্টা বা তার কম ঘুমানো হয়, তাহলে সেই ব্যক্তির রক্তে এক ধরনের মলিকিউল বা বিশেষ প্রোটিন তৈরি হয়, যা শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এই প্রদাহই পরে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে, এমনকি ধমনীর ক্ষতিও করতে পারে। এটি শুধু বয়স্কদের নয়, কমবয়সীদের মধ্যেও দেখা দিতে পারে।

গবেষকরা আরও জানান, মানসিক চাপ, গুরুতর শারীরিক অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করার জন্য এই প্রোটিনগুলো শরীরে তৈরি হয়। যদি এই প্রোটিনগুলো দীর্ঘ সময় রক্তে উচ্চ মাত্রায় থাকে, তাহলে অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন, হার্ট ফেইলিয়র কিংবা অন্যান্য হৃদ্‌সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিতে পারে।

যেভাবে পরীক্ষা করা হয়

উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ১৬ জন সুস্থ কমবয়সী পুরুষের উপর পরীক্ষা করেন। তাদের প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চা এবং গায়ে রোদ গ্রহণের সময় অপরিবর্তিত রেখে শুধু ঘুমের সময়সূচি পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। এক দলকে তিন দিন সাড়ে ৮ ঘণ্টা করে ঘুমাতে দেওয়া হয়, আরেক দলকে মাত্র ৪ ঘণ্টা ২৫ মিনিট ঘুমাতে দেওয়া হয়। এরপর তাদের রক্ত পরীক্ষা করে দেখা যায়, যারা কম ঘুমিয়েছেন, তাদের রক্তে প্রদাহ সৃষ্টিকারী প্রোটিনের উপস্থিতি অনেক বেশি বেড়ে গেছে।

শরীরচর্চা করলেও কমে যায় না

দিনের পর দিন কম ঘুমানোর পরে শরীরচর্চা করলেও প্রোটিনের মাত্রা কমে না। অর্থাৎ, নিয়মিত ঘুম না হলে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করেও পুরো উপকার পাওয়া যায় না। সবশেষে এটাই বলা যায়, রোগের ঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্যকর জীবনধারায় ঘুমকে অংশ করে তুলুন । প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান। এই অভ্যাস হৃদ্‌যন্ত্র, রক্তচাপ ও হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সূত্র: এনডিটিভি, রিসার্চ গেট, হেলথ ডায়লগ

এসএকেওআই/এমএস