আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনের যে নেতাকে ৫ হাজার ২০০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ইসরায়েল

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে ১৯১৭ সালে ২ নভেম্বর বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিন ভূখন্ডে ইহুদিদের জন্য একটি আবাসস্থল প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেয় যুক্তরাজ্য। এর প্রেক্ষিতে ১৯৪৮ সালের ১৪ মে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসরায়েল রাষ্ট্র যা ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়ের সূচনা করে। ধীরে ধীরে ফিলিস্তিনিদের জমি ঘর-বাড়ি দখল থেকে শুরু নানা নির্যতন শুরু করে দখলদার ইসরায়েল। ফলে বেশ কয়েকবার সংগঠিত হয় আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ বিদেশী রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদদে নিজ দেশে পরাধীন হয়ে পড়ে ফিলিস্থিনিরা। তবে স্বাধীনতার আশা হারায়নি এ ভূখণ্ডের সংগ্রামী জনতা। আহত-নিহতদের তালিকা সময়ের সঙ্গে বড় হলেও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন নেতারা।

সবচেয়ে বেশি বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এবং দীর্ঘ সময় ধরে ইসরাইয়েলি কারাগারে বন্দি থাকা এমন এক নেতার নাম আবদুল্লাহ বারঘুতি। আবদুল্লাহ ১৯৭২ সালে কুয়েতে জন্মগ্রহণ করলেও তার পরিবারে আদি নিবাস রামাল্লার বেইত রিমা এলাকায়। অসলো চুক্তির  প্রাক্কালে ১৯৯০ সালের শেষের দিকে তিনি পশ্চিম তীরে চলে আসেন এবং হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডে যুক্ত হন। হামাসের এ নেতা বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির প্রধান বোমা প্রস্তুতকারক ছিলেন।

২০০০ সালের শুরুতে পরিচালিত একাধিক হামলায় তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ করে ইসরায়েল সরকার। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০০৩ সালে ইসরায়েলের শিন বেত সিকিউরিটি সার্ভিস তাকে গ্রেফতার করে। বিভিন্ন অপরাধে তাকে অভিযুক্ত করে ৬৭ বার যাবজ্জীবন এবং ৫,২০০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি আছেন আবদুল্লাহ। বর্তমানে তিনি ইসরায়েলের গিলবোয়া কারাগারে বন্দি আছেন। কারাবাসের অধিকাংশ বছরগুলোতে তাকে কনডেম সেলে রাখা হয়েছে।

সম্প্রতি তার মেয়ে অভিযোগ করেছেন, গিলবোয়া কারাগারে ইসরায়েলি প্রহরীদের হাতে তিনি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাকে লোহার রড ও বেল দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নির্যাতন করা হয়েছে যার ফলে তার শরীরের একাধিক হাড় ভেঙে গেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবে হামাস ও ইসরায়েলি বন্দি বিনিময় আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে আবদুল্লাহ বারঘুতির নাম। তবে আবদুল্লাহ বারঘুতিসহ আরও পাঁচ জন বন্দিকে মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইসরায়েল সরকার। অন্য পাঁচ জন হলেন আহমাদ সাদাত, মারওয়ান বারঘুতি, হাসান সালামেহ, ইব্রাহিম হামেদ, আব্বাস আল-সায়েদ।

ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার আহত হয়েছেন বলে তথ্য প্রকাশ করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইউনিসেফের তথ্য মতে, এ যুদ্ধে ২০ হাজারের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ৪২ হাজারের বেশি শিশু; যাদের মধ্যে অন্তত ২১ হাজার শিশু স্থায়ীভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। 

 সূত্র : মিডল ইস্ট আই

কেএম