রাজধানীর মিরপুর শিয়ালবাড়িতে কেমিক্যাল গোডাউনের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় উদ্ধার অভিযান শুরু করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের আরও ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
বুধবার (১৫ অক্টবর) বিকেলে আগুনের ঘটনাস্থলে এ কথা বলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, গার্মেন্টসের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পাশে থাকা কেমিক্যাল গোডাউনের আগুনও আজ দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে গোডাউনে ৬-৭ ধরনের কেমিক্যাল থাকায় সতর্কতা অব্যাহত রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখানে উদ্ধার অভিযান শুরু করতে ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ভবনটি অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কলামসহ বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে ভবনে সরাসরি সার্চ অপারেশন চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ধাপে ধাপে কাজ করার কারণে উদ্ধার অভিযান শুরু হতে আরও ২৪-৭২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগুন লাগা আলম ট্রেডার্সের মূল ফটক তালাবদ্ধ ছিল। ফায়ার সার্ভিসের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে কেটে খুলতে হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মানুষ ছিল না। তবে সার্চ অপারেশন না চালানো পর্যন্ত বলতে পারবো না মানুষ ছিল কি ছিল না। অপারেশনের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজদের বিষয়ে জানতে চাইলে লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত আলম ট্রেডার্সের মূল ফটক তালাবদ্ধ ছিল, যা ফায়ার সার্ভিসের যন্ত্রপাতি দিয়ে কেটে খুলতে হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তবে সার্চ অপারেশন সম্পন্ন হওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে সেখানে কেউ ছিলেন কি ছিলেন না।
যে কেমিক্যাল রয়েছে তা মানবদেহের জন্য কতটা ক্ষতিকর। এমন প্রশ্নে ফায়ার সার্ভিসের এ পরিচালক বলেন, এখানকার কেমিক্যাল অবশ্যই ক্ষতিকর। কেমিক্যালের তেজষ্ক্রিয়তা রক্তে মিশে যায়, ৪০০-৫০০ গজ পর্যন্ত থাকবে। এলাকাটি সম্পূর্ণ বিপজ্জনক। সুতরাং এখান থেকে দূরে থাকা ভালো। আমরা এলাকাটিতে মাইকিং করে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছি।
এর আগে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) শিয়ালবাড়িতে পোশাককারখানা ও কসমিক ফার্মা নামের একটি কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগে। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের কাছে আগুন লাগার খবর আসে। খবর পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ১১টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রথমে পাঁচটি ইউনিট পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে আরও সাত ইউনিট যোগ দেয় আগুন নিয়ন্ত্রণে।
পরে পোশাক কারখানা ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিচতলায় আগুনের তীব্রতা এবং ছাদে ওঠার দুটি তালাবদ্ধ দরজার কারণে অনেকেই ভবন থেকে বের হতে পারেননি। ফলে তারা দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় আটকা পড়ে আগুনে পুড়ে মারা যান।
টিটি/এমএএইচ/জেআইএম