শিক্ষা

শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ৫ শতাংশ করলো সরকার

আমরণ অনশনে বসা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ৫ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন দুই হাজার টাকা হারে বাড়িভাড়ার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

রোববার (১৯ অক্টোবর) সকালে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের উপসচিব মিতু মরিয়মের সই করা চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় এটিকে আদেশ বা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করবো।

এতে বলা হয়েছে, সরকারের বিদ্যমান বাজেটের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে (সর্বনিম্ন ২০০০ টাকা) করা হলো। এ আদেশ নভেম্বর মাস থেকে কার্যকর হবে।

সম্মতিপত্রে অর্থ মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে শিক্ষকদের এ বাড়িভাড়া প্রদানে কিছু শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। সেগুলো হলো-

১. উক্ত বাড়িভাড়া ভাতা পরবর্তীতে জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী সমন্বয় করতে হবে।

২. ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) শিক্ষক-কর্মচারী এমপিও নীতিমালা-২০২১’, ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) শিক্ষক-কর্মচারী এমপিও নীতিমালা ২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত)’ এবং ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (ভোকেশনাল, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা, কৃষি ডিপ্লোমা ও মৎস্য ডিপ্লোমা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে জারিকৃত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন, আদেশ, পরিপত্র, নীতিমালা অনুসরণপূর্বক নিয়োগের শর্ত পালন করতে হবে।

৩. ভাতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা কোনো বকেয়া প্রাপ্য হবেন না।

৪. ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে সকল আর্থিক বিধি-বিধান অবশ্যই পালন করতে হবে।

৫. এ ভাতা সংক্রান্ত ব্যয়ে ভবিষ্যতে কোনো অনিয়ম দেখা দিলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ অনিয়মের জন্য দায়ী থাকবেন।

জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মিতু মরিয়ম জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া বাড়ানোর জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। সেটি বিবেচনা করে একটি সম্মতিপত্র পাঠিয়েছি আমরা।

আরও পড়ুনথালা-বাটি হাতে এবার ‘ভূখা মিছিল’ করবেন শিক্ষকরটানা অনশনে অসুস্থ শিক্ষকরা, ‘মন গলছে না’ আমলাদের ‘সি আর আবরার, আর নেই দরকার’ স্লোগানে শিক্ষকদের পতাকা মিছিল

জানা যায়, বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ানোর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন এমপিওভক্ত শিক্ষকরা। গত আগস্ট মাসে তারা ঢাকায় মহাসমাবেশ করে মূল বেতনের ওপর শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা দেওয়ার দাবি তোলেন।

কিন্তু তাদের দাবি উপেক্ষা করে গত ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাড়িভাড়া মাত্র ৫০০ টাকা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ৫ অক্টোবর শিক্ষক দিবসে সে প্রজ্ঞাপন সামনে এলে তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ওই প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখ্যান করেন শিক্ষকরা।

তারা বাড়িভাড়া ২০ শতাংশ হারে দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে গত ১২ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন শিক্ষকরা। পরে বিকেলে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন। এরপর থেকে সেখানে অবস্থান নিয়েই বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

একই সঙ্গে সারাদেশের প্রায় ৩০ হাজার এমপিভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টানা কর্মবিরতি চলছে। গত ১৩ অক্টোবর থেকে অনির্দিষ্টকালের এ কর্মসূচি করছেন তারা। এতে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

শিক্ষকদের তিন দফা দাবি

মূল বেতনের ওপর ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা (বোনাস) দিতে হবে।

এএএইচ/এসএনআর/বিএ/এমএস