সোশ্যাল মিডিয়া

ফেসবুকে ‘লাল কয়েন’ বিক্রি, প্রতারণা নয় তো?

হঠাৎ করেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ১৯৯৬ সালের লাল কয়েন বিক্রির পোস্ট দেওয়া হচ্ছে। সেসব পোস্ট আবার রীতিমত ভাইরাল হচ্ছে। পোস্টের কমেন্টে বিভিন্ন জন তাদের ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার দিচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত কেউ লাল কয়েন বিক্রি করতে পেরেছেন কি না জানা যায়নি। অনেকেই এটাকে আবার প্রতারণা বলছেন।

জানা যায়, ১ ও ২ টাকার ধাতব মুদ্রা বা কয়েন স্বাভাবিকভাবে লেনদেনের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১৫ অক্টোবর এক বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানিয়েছে, কাগুজে নোটের পাশাপাশি ধাতব নোটও বৈধ। ফলে ধাতব নোট লেনদেনে অনীহা প্রকাশ করা প্রচলিত আইনের লঙ্ঘন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের কোনো কোনো এলাকায় এবং কিছু মানুষের মধ্যে ১ ও ২ টাকার ধাতব নোট ব্যবহারে অনীহা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ধাতব নোট বৈধ বলে এসব লেনদেনে অনীহা প্রকাশ করা দেশের প্রচলিত আইনের লঙ্ঘন। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সব শ্রেণির মানুষকে এই ধাতব নোট ব্যবহারে উৎসাহিত করেছে।

ধারণা করা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্দেশনাকে কাজে লাগাতে অসৎ উপায় অবলম্বন করছে কোনো চক্র। অনেকের বাসায় জমানো ১৯৯৬ সালের লাল কয়েন তারা সংগ্রহ করতে চাইছেন। কিংবা এর পেছনে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে। না হলে হঠাৎ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে তারা লাল কয়েন সংগ্রহ করতে চাইছেন কেন?

সম্প্রতি কিছু ফেসবুক পেজ এবং আইডির সন্ধান পেয়েছে জাগো নিউজ। কেউ কেউ কৌশলে লাল কয়েন সংগ্রহ করার জন্য ইশারায় পোস্ট করছেন। ‘লাল কয়েন সেল’ নামে একটি পেজে লেখা হয়েছে, ‘১৯৯৬ সালের কয়েন থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।’ ‘টপ সেলার’ পেজে লেখা হয়েছে, ‘কোন রেজিস্ট্রেশন লাগে না লাল কয়েন বিক্রি করতে।’

আরও পড়ুনএবার সমালোচনার মুখে ভাইরাল রিপন মিয়াফেসবুকে হঠাৎ আলোচনায় হুমায়ূন-গুলতেকিন

‘ব্রোকেন সিবি’ লিখেছে, ‘কয়েন যারা সেল দিবেন, কোন জেলা থেকে বলছেন কমেন্টে বলে যাবেন, ঠিকানা দিবেন। আমরা গিয়ে নিয়ে আসবো। আগে ভিডিও কলে সারাসরি কথা বলে কয়েন বিক্রি করবেন।’

‘এমডি লিয়ন’ ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছেন। তিনি লাল কয়েনের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আমি ভাবতেছি যারা ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা দিয়ে গোল্ড কিনছে, তাদের মনের অবস্থা কি... আজ গোল্ড ১ লাখ ৯৩ হাজার।’ এই পোস্টের কমেন্টে অনেকেই নিজের ঠিকানা ও ফোন নম্বর দিয়ে বলছেন, ‘আমার কাছে কিছু কয়েন আছে।’

এ ছাড়া কয়েকটি পোস্টের কমেন্টে গিয়ে দেখা গেছে সবাই নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বার দিয়ে কমেন্ট করছেন। কার কাছে কতটি কয়েন আছে, এমন তথ্যও উল্লেখ করছেন। ‘রিতা বিশ্বাস’ লিখেছেন, ‘আমার কাছে অনেক পুরোনো কয়েন ও নোট আছে যোগাযোগ করুন।’

তবে ‘ছিপন নাথ’ লিখেছেন ভিন্ন কথা। তিনি এটাকে প্রতারণা আখ্যা দিয়ে লিখেছেন, ‘এইসব বাটপারি করে আর কয়দিন মানুষকে ধোকা দিবি? এবার ভাইরাল হওয়াটা বন্ধ কর বাটপারের দল।’ তার এ অনুমান যদি সত্য হয়, তাহলে সবারই সচেতন হওয়া দরকার। এমনকি প্রশাসনের পক্ষ থেকেও উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। এ চক্রকে শনাক্ত করা সময়ের দাবি।

এসইউ/এএসএম