সাহিত্য

তুমিহীন আকাশ এবং অন্যান্য

তুমিহীন আকাশ

নাই বা হলো একসাথে চলা, নাই বা হলো আদি অসুখের একান্ত মিলন কিংবা নিকটে এসে গল্প বলা। সামনের দৃশ্য চমকিত হয় হৃদমন্দিরে স্বর্ণের মতো ভারী, দামি—সাথে রাখার ভয়।

যে ভাবনায় সকল বাধা হয়ে যেত শক্তিহীন, নিরুপায়নিত্যদিনের সংযুক্ত আহ্বান, উড়ন্ত বক ফেলে পালকছুট দেয় খোরাকি নেশায়। ব্যয় হয় সকল সঞ্জয়, শক্তির ভবিষ্যৎ।কী এক খেলা, উপর্যুপরি! বেদনার লাগামহীন ঘোড়া।

মিলনে তীব্রতা, জাগে পুর্নবার ব্যথাযেমন নিজ আবাসে ফিরে আসে, পোকার দল—ধ্বংসে, গড়নেনতুন মিলনে অথবা হাহাকারে স্পর্ধিত হৃদয়।

অথবা চলে আসে তোমার হয়ে সমস্ত প্রত্যাশারবুনন, একে একে শব্দমালা। তোমায় ভাবার অবকাশ।

ছড়িয়ে পড়ুক সমস্ত অন্তপুরেতুমিহীন আকাশ—ভাবনার বিকাশেপিছিয়ে পড়ার প্রয়াস।যেখানে পড়ে থাকে অভিলাষের নরম ছোঁয়া। ****

তলপেটে!

কত কথা হতো প্রতিদিনের সূচিতে, আড্ডার সমাহারেব্যক্ত অনুভূতির ঝলসানো উষ্ণতা বেয়ে যেতসমস্ত হৃদয়জুড়ে, বলনে-চলনেভাবচরণে—থেমে যেত সব গুঞ্জন!

পুনরায় জেগে উঠতো—বাঁচার অদৃশ্যম, কোলাহলপূর্ণ আবেগ। নিকটত্ব অথবা পরাজয়।

এখনো ফিরে যেতে ইচ্ছা—সেই-সব পুরোনোভূমি, স্মৃতিমাখা তল্লাটে—ফিরে যেতে ইচ্ছা—ঘর্মাক্ত সিটে, অপেক্ষার প্রহরে—মানিয়ে চলার শক্তি।

এখনো ইচ্ছা জাগে—আবার ফিরে আসুক সুখঅসুখ হয়ে—বিপদ হয়ে—ঝড় হয়েব্যথার মলিন কথারেখায়, সমস্ত হৃদয়জুড়ে।লিখে দেবে অনন্ত উষ্ণতার সরল—অভিব্যক্তি।

এখনো জাগ্রত হয়, পুরোনো অভ্যাসনতুন করে বেঁচে-বর্তে থাকার অলস দুপুরসবটা বিকেল হারিয়ে যাক—গোধূলির তলপেটে।

****

অভিসারে

পথের সকল ধুলা-কালি গড়িয়ে যায়অজানায়। যেখানে দাঁড়াতে পারে সেখানে ঠাঁই।অজস্র ছুটন্ত গতি, অবিরাম অগ্রগতি—সামনেভয় অথবা জয়। মানুষের কোলঘেঁষে—মানুষের আশ্রয় অথবাপ্রতারিত বুদ্ধি।এভাবে কি সভ্যতা-ভব্যতা এগোয়?

নিশ্চয়তার চেয়ে ভরসা বেশি আগলে রাখেদূর্বাঘাসের শক্তি মাটির অন্তমূলে, মানুষের হয়েমানুষ খেলে, জিতে যায়—অসীম স্পন্দন।

প্রতি শব্দের বিপরীতে জীবনের সংলাপ, অনর্গলউদ্ভাসিত কথোপকথন—পরাজয়ে কি সব শেষ?

কেউ হঠাৎ চেয়ে দেখলো, পরিচিতভঙ্গি পেখম মেলে পাখনায়। জীবন-তোবাঁচার জন্য ছটফটায় অচেনার বিছানায়—গোপনে, অভিসারে অথবা নির্লজ্জে।

****

সর্বক্ষণের চাওয়া

কী এক আলগা বাতাস সব দুলিয়েদিলো, আয়োজনের দৃঢ়তা ভেসে গেল কোথায়?আজীবনের প্রতিশ্রুতি থেমে গেল এক নিমেষেটিকে থাকতে আঁকড়ে ধরা নতুন আলিঙ্গন,এক নতুন হাত, স্থির বাস, ফিরে আসার ঠিকানা।পুরোটাই অচেনা!

তবে কেন, এই অস্থিরতা? থিতু না হতে পারার আক্ষেপচাপা অভিমান।নিজেকে দোষী করার বিপুল অভিযোগ।

আমার বিরুদ্ধে আমি, বিপরীতে ছায়া ঘেরা মুখজবাবহীন মুখচ্ছবি—নাটকের শেষ অংশের মঞ্চায়ন।নিঃশেষ, আবার জেগে ওঠে কালবৈশাখী ঝড়েরমত প্রবল বেগ।

একদিন রাতে, দুহাত বুকের মাঝখানে ব্যথা নিয়েঝাপটে আছে। অধরা ব্যথা, যদি একবার ভেসে উঠতোচোখের সামনে—নীরবে, নিরালায়। থাকুক এ ব্যথা—বুকের মাঝখানে, সর্বক্ষণের চাওয়া।

এসইউ/জেআইএম