বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন কমিয়ে তিনটি করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গেজেট অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। ফলে বাগেরহাটের আসন আগের মতো চারটিই থাকবে।
এ সংক্রান্ত রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে সোমবার (১০ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি ফয়সাল হাসান আরিফের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কাজী সামান্তা এনাম ও রাজিয়া সুলতানা। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান।
রায়ের বিষয়টি জানিয়ে পরে রিট আবেদনকারীদের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আগের মতো বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহাল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বাগেরহাটে সংসদীয় আসন চারটি থেকে কমিয়ে তিন আসন করা সংক্রান্ত ইসির সিদ্ধান্তকে আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। আগের মতো বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহাল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাগেরহাটে চারটি আসন ছিল, একটি কমিয়ে গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো হয়েছিল। বাগেরহাট-৪ আসন কেটে গাজীপুর-৬ আসন করা হয়েছিল। এখন বাগেরহাট-৪ আসন পুনর্বহাল হবে এবং গাজীপুর-৬ আসন বাদ পড়বে।
গত ৪ সেপ্টেম্বর এ-সংক্রান্ত চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এতে চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে বাগেরহাটকে তিন আসনে ভাগ করা হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও নির্বাচন কমিশনের সচিবসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল যথাযথ (অ্যাবসোলিউট) ঘোষণা করে আজ রায় দেওয়া হয়।
রায়ের পর নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের অভিপ্রায় ও সিদ্ধান্ত অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বুধবার (৩০ জুলাই) ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ৩৯টির সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে ভোটার সংখ্যার সমতা আনতে গিয়ে গাজীপুর জেলায় একটি আসন বাড়িয়ে ছয়টি এবং বাগেরহাটের আসন চারটি থেকে একটি কমিয়ে তিনটির প্রস্তাব করা হয়।বাগেরহাটে আসন কমানোয় ক্ষোভ, ভোটার বিবেচনায় আসন বণ্টনে প্রশ্ন
আগে এ জেলায় চারটি আসন ছিল- বাগেরহাট-১ (মোল্লারহাট-ফকিরহাট-চিতালমারি), বাগেরহাট-২ (গেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা), বাগেরহাট-৪ (মোড়েলগঞ্জ-সরণখোলা)। এবার বাগেরহাট-১ আগের মতো বহাল রাখা হয়েছে। বাগেরহাট সদর, কচুয়া, রামপাল নিয়ে বাগেরহাট-২ আসন এবং মোংলা, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ আসনের গেজেট প্রকাশ করে ইসি।
এদিকে, বাগেরহাট জেলায় আসন কমানোয় গত ৩১ জুলাই ক্ষোভ প্রকাশ করে সিইসি বরাবর আবেদন করে স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলন। একই সঙ্গে ভোটার সংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সংগঠনটি।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে বাগেরহাট-৪ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলনের চেয়ারম্যান কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রস্তাবিত সীমানা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে সিইসি বরাবর এ আবেদন জানান। কাজী মনিরুজ্জামান মনির বিএনপির অঙ্গ সংগঠন তাঁতীদল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির উপদেষ্টাও।
এফএইচ/এমএএইচ/এমএস