সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আপত্তি
বাগেরহাটে আসন কমানোয় ক্ষোভ, ভোটার বিবেচনায় আসন বণ্টনে প্রশ্ন
বাগেরহাট জেলায় আসন কমানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর আবেদন করেছে স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলন। একই সঙ্গে ভোটার সংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে বাগেরহাট-৪ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলনের চেয়ারম্যান কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রস্তাবিত সীমানা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে সিইসি বরাবর এ আবেদন জানান। কাজী মনিরুজ্জামান মনির বিএনপির অঙ্গ সংগঠন তাঁতীদল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির উপদেষ্টাও।
এ বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা খুবই অভাগা জেলা বাগেরহাট। আমাদের একটি আসন নেই হয়ে গেছে। বাগেরহাটে আমার জন্মলগ্ন থেকে চারটি আসন। এ বাগেরহাট-৪ আসন যেটা নেই হয়ে গেছে সেখান থেকে আমি এসেছি। এ আসনটি বহাল রাখার জন্য সিইসির কাছে দাবি জানিয়েছি।’
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বুধবার (৩০ জুলাই) ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ৩৯টির সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে ভোটার সংখ্যার সমতা আনতে গিয়ে গাজীপুর জেলায় একটি আসন বাড়িয়ে ছয়টি এবং বাগেরহাটের আসন চারটি থেকে একটি কমিয়ে তিনটির প্রস্তাব করা হয়।
ছোটখাটো পরিবর্তন আনা হয়েছে ৩৯টি আসনে। খসড়া প্রকাশের পর দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ রয়েছে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। এরপর শুনানি করে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি।
আগে এ জেলায় চারটি আসন ছিল- বাগেরহাট-১ (মোল্লারহাট-ফকিরহাট-চিতালমারি), বাগেরহাট-২ (গেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা), বাগেরহাট-৪ (মোড়েলগঞ্জ-সরণখোলা)। এবার বাগেরহাট-১ আগের মতো বহাল রাখা হয়েছে। বাগেরহাট সদর, কচুয়া, রামপাল নিয়ে বাগেরহাট-২ আসন এবং মোংলা, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘শুধু ভোটারের ওপর ভিত্তি করে যদি আমাদের ওখানে কেটে দেওয়া হয় আমরা একেবারে অনুন্নত থাকবো। আমাদের এ উন্নয়ন সুবিধাটা হবে না। বাগেরহাটে চারটি আসন রাখতে বলেছি আমরা।’
ইসির প্রস্তাবিত সীমানা নিয়ে কেউ মামলা করলে নির্বাচনও আটকে যাওয়ার শঙ্কা করেন তিনি।
কেউ যদি এখন দ্রুত কোনো মামলা করে, আইনের ব্যবস্থা নেয় তাহলে নির্বাচন প্রক্রিয়াটা থেমে যাবে। মানুষের যে আশা আকাঙ্ক্ষা ভোটাধিকার সেটা তারা প্রয়োগ করতে পারবেন না। যে কোনো লোক এখন করতে পারে। সবাইকে তো বোঝানো যাবে না। এক একটা আসনে ১৭/১৮ জন এমপি প্রার্থী বিভিন্ন দলের, এটা করলে দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া সমস্যা হয়ে যাবে বলেন এ সম্ভাব্যপ্রার্থী।
কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, সিইসি নিয়ম মেনে সীমানা নিয়ে আবেদন করার পরামর্শ দেন। ইসি শুনানি করে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তাকে।
ইসির প্রস্তাবিত সীমানা নিয়ে আপত্তি জানানো শুরু হয়েছে। বাগেরহাটে বুধবার রাতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে সংক্ষুব্ধরা সিইসির সঙ্গেও ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ শুরু করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় দুইজন নেতা। নির্বাচন ভবনের সামনে বিক্ষোভ করছেন কয়েকজন।
বুধবার নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘আমরা ৬৪ জেলার গড় ভোটার নির্ধারণ করেছি ৪ লাখ ২০ হাজার ৫০০ জন। এটা ধরে একটি আসন বাড়লে তা গাজীপুরে হবে। এ গড়ের কম বাগেরহাটে একটি কমালে সমতা চলে আসে। বাকিগুলোয় আসন কমবেশি প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। দুই জেলার আসনই অ্যাফেক্টেড হয়েছে। আর কোথাও ঝামেলা নেই। ৩৯টি আসনে অ্যাডজাস্টমেন্ট রয়েছে।’
এমওএস/এমএএইচ/জেআইএম