আইন-আদালত

ঢাবির কেন্দ্রীয় মাঠসহ সব খেলার মাঠ সংরক্ষণের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠসহ অন্যান্য খেলার মাঠ সংরক্ষণের নির্দেশনা দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে জারি করা রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে বুধবার (১২ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি সোহরাওয়ারদী ও বিচারপতি দিহীদার মাসুম কবীর এর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন।

রায়ের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

তিনি জানান, মাঠগুলো হলো শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক খেলার মাঠ, জগন্নাথ হল খেলার মাঠ, হাজী মুহাম্মদ মুহসিন হল খেলার মাঠ, কবি জসীম উদদীন হল খেলার মাঠ, ফজলুল হক হল খেলার মাঠ, স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হল খেলার মাঠ, ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল খেলার মাঠ ও রোকেয়া হল খেলার মাঠ।

আদালত বলেছেন, শিক্ষার্থীদের শারীরিক সুস্থতা, মানসিক বিকাশ, সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা ও মানষিক বিষণ্ণতা দূরীকরণে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রিটের পক্ষে শুনানিতে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল। আর রাষ্ট্রপক্ষে পক্ষে ছিলেন ডিএজি মো. আনিছুর রহমান খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মুনিরুজ্জামান।

শুনানীতে মনজিল মোরসেদ বলেন, মহানগরী, বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরের পৌর এলাকাসহ দেশের সকল পৌর এলাকার খেলার মাঠ উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার আইন, ২০০০ এর বিধান অনুসারে খেলার মাঠের প্রকৃতি পরিবর্তন করা নিষেধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। তবু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ দখল করে ব্যবসায়িক মালামাল রেখে ছাত্র-ছাত্রীদের খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। শুনানি শেষে আদালত কয়েকটি নির্দেশনাসহ রুল অ্যাবসলিউট করে রায় দেয়।

আদালত বলেছেন, স্পোর্টস গ্রাউন্ড ছাত্রদের জন্য অত্যাবশক। ছাত্রদের শারীরিক সুস্থতা, মানসিক বিকাশ, সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা এবং মানসিক বিষন্নতা দূরীকরণে স্পোটর্স গ্রাউন্ডের ভূমিকা অপরিসীম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্পোটর্স গ্রাউন্ড বা খেলার মাঠ সংরক্ষণ করার আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

জানা গেছে, ২০১২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলার মাঠ থাকলেও খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠসহ বড় মাঠগুলো ভাড়া দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। এই সংবাদ প্রকাশিত হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস গ্রাউন্ড থেকে নির্মাণসামগ্রী অপসারণ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে খেলাধুলা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট করা হয়। রিট করে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করে। শুনানি শেষে ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করে।

রুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ কেন সংরক্ষণ করা হবে না মর্মে রুল জারি করেন আদালত। সেই সাথে মামলার বিবাদীদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস গ্রাউন্ড থেকে নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নিতে এবং ছাত্রদের খেলাধুলার কার্যক্রম নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পর সাম্প্রতিক সময়ে ঢাবির কেন্দ্রীয় মাঠসহ সকল মাঠ যথাযথ অবস্থায় আনার জন্য রিটকারী পক্ষ সম্পূরক আবেদন করে। রিটের পক্ষে পিটিশনার হলেন অ্যাডভোকেট মো. ছাওয়ার আহাদ চৌধুরী এবং অ্যাডভোকেট এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া। বিবাদীরা হলেন পরিবেশ সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, রেজিস্ট্রার, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীসহ মোট ৫ জন।

এফএইচ/এসএইচএস/জেআইএম