কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কোনো কর্মকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ‘থ্রেড টু জাস্টিস’ মনে করছে না বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ ‘স্বচ্ছ ও স্বাভাবিক’ প্রক্রিয়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এ প্রসিকিউটর বলেন, দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে। বিচারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্য এমনটি করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দৃঢ়তার সঙ্গে এসব পদক্ষেপ রুখে দেবে বলে আমার বিশ্বাস।
বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মিজানুল ইসলাম বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায় ঘিরে সরকারের বিরুদ্ধে প্রোপাগাণ্ডার অংশ হিসেবে দেশজুড়ে নৈরাজ্যের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ। তবে এটিকে থ্রেড টু জাস্টিস মনে করি না। বিচারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে তারা এমনটি করছে।
বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ে মিজানুল ইসলাম বলেন, আইনানুগভাবে বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। দেশে এখন যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে, দৃঢ়তার সঙ্গে এ ধরনের পদক্ষেপকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রুখে দেবে বলে আমার বিশ্বাস।
বিদেশি গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হচ্ছে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিদেশি কোনো গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের ক্ষমতা আমাদের নেই। কেন প্রচার করছে তা সেসব গণমাধ্যম ভালো জানে। তবে তাদের (সাক্ষাৎকার নেওয়া বিদেশি গণমাধ্যম) উচিত এই প্রশ্ন করা যে, এই গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে, হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেটা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রচার করেছে এবং তারা বিশ্লেষণ করেছে। এটা তারই (শেখ হাসিনা) কণ্ঠস্বর। কাজেই তাদের এই প্রশ্নগুলো করা উচিত এবং যারা এই প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে, তাদেরই জবাবটা দেওয়া উচিত।
এই প্রসিকিউটর বলেন, ট্রাইব্যুনাল-১ এ আজ পাঁচটি মামলার দিন ধার্য ছিল। এর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ছিল শাপলা চত্বরে গণহত্যা ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চট্টগ্রামে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড। দুটোতেই আমরা সময় চেয়েছি।
আগামী বছরের ১২ জানুয়ারি আমাদের সময় মঞ্জুর করে প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করা হয়েছে। এছাড়া চানখারপুলে হত্যাকাণ্ডের মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আমরা দুজন সাক্ষীর হাজিরা দিয়েছিলাম। একজন জব্দ তালিকার সাক্ষী। তিনি তার সাক্ষ্য শেষ করেছেন।
দ্বিতীয়জন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বা সর্বশেষ সাক্ষী। তদন্ত সংস্থার উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম জবানবন্দি শুরু করেছেন। আংশিক জবানবন্দি শেষে ডিফেন্সের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) পর্যন্ত মুলতবি করেন ট্রাইব্যুনাল।
তিনি আরও বলেন, ট্রাইব্যুনাল-২-এ দুটি মামলার দিন ধার্য ছিল। এর মধ্যে আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে আমরা দুজন সাক্ষীর হাজিরা দিয়েছি। একজন সাক্ষী আশরাফুল ইসলামের জবানবন্দি শেষ হয়েছে। তার জেরা চলমান। আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলাও ছিল। সেই মামলায় আজ সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আমরা বিশেষ পরিস্থিতির কারণে সাক্ষী আনতে পারিনি বা আসেনি। এ কারণে সময় চেয়েছি।
এফএইচ/এমকেআর/এমএস