বিশ্বব্যাপী শিশু ও কিশোরদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের হার গত দুই দশকে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এর জন্য দায়ী অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক কসরতের অভাবে দ্রুত বাড়তে থাকা স্থূলতা।
সম্প্রতি দ্য ল্যানসেট চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট হেলথ পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। ২১টি দেশের ৯৬টি গবেষণা থেকে সংগৃহীত চার লাখেরও বেশি শিশুর তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে বিশ্বের ১১ কোটি ৪০ লাখ শিশু ও কিশোর প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হচ্ছে। এই অবস্থার ফলে হৃদ্রোগ, কিডনি বিকলতা এবং নানা জটিল স্বাস্থ্যসমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। ২০০০ সালে যেখানে মাত্র ৩ দশমিক ২ শতাংশ শিশু-কিশোরের উচ্চ রক্তচাপ ছিল সেখানে ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ২ শতাংশে, যা প্রায় দ্বিগুণ।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ৮ দশমিক ২ শতাংশ শিশু ও কিশোরের প্রিহাইপারটেনশন আছে অর্থাৎ রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কিন্তু এখনো উচ্চ রক্তচাপের পর্যায়ে পৌঁছায়নি। কিশোরদের মধ্যে এই হার আরও বেশি, যা প্রায় ১১ দশমিক ৮ শতাংশ। এছাড়া ছোট শিশুদের মধ্যে তা ৭ শতাংশ।
গবেষকদের মতে, উচ্চ রক্তচাপের মূল চালিকাশক্তি স্থূলতা। স্থূল শিশুদের প্রায় ১৯ শতাংশ উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত। কিন্তু স্বাভাবিক ওজনের শিশুদের মধ্যে এই হার ৩ শতাংশের কম।
এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইগর রান বলেন, শিশুদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের এই দ্বিগুণ বৃদ্ধি চিকিৎসক ও অভিভাবকদের জন্য সতর্কবার্তা।
ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা প্রফেসর ব্রায়ান উইলিয়ামস বলেন, শৈশবের উচ্চ রক্তচাপ প্রায়ই প্রাপ্তবয়স্ক বয়স পর্যন্ত থেকে যায়, যা ভবিষ্যতে হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়ায়।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ যেসব পরামর্শ দিয়েছেন তা হচ্ছে- শিশুদের ফল, সবজি ও পূর্ণ শস্যে সমৃদ্ধ খাদ্য খাওয়াতে হবে। এছাড়া লবণ ও চিনি কমাতে হবে ,নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও স্ক্রিন টাইম সীমিত করতে হবে, পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস থাকলে নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ জরুরি।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান
কেএম