নরসিংদীর রায়পুরায় অনৈতিক নির্দেশ না মানায় এবার উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে হাত-পা ভেঙে ফেলার হুমকি দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল সাদেক। গত রোববার দুপুরে উপজেলার মরজাল কাজি মো. বশির উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে অযৌক্তিক দাবি না রাখায় তিনি এই হুমকি দেন। এই ঘটনায় ভীত উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রেদোয়ান হোসেন ছুটিতে গেছেন।আবদুল সাদেক উপজেলার রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এর আগে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে ওই নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেছে নির্বাচন কমিশন।বিদ্যালয়ের নির্বাচন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, আগামী ২১ জুলাই মরজাল কাজি মো. বশির উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন। তফসিল অনুযায়ী গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিক্রি ও জমা নেয়া হয়। এতে অভিভাবক প্রতিনিধি (পুরুষ) পদে ৮ জন ও অভিভাবক প্রতিনিধি (মহিলা) পদে ৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। গত রোববার ছিল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই।উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রেদোয়ান হোসেন নির্বাচনের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা। তিনি নিজ কার্যালয়ে বেলা ২টার দিকে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করার সময় আসেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল সাদেক। তিনি প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রেদোয়ান হোসেনকে অভিভাবক প্রতিনিধি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা মজিবুর রহমান, আমিনুল হক ও রাশেদুল হকের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করে বাতিল করার নির্দেশ দেন। কিন্তু বিধি অনুযায়ী তাদের মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তা বাতিল করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতেই তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন।উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও নির্বাচনের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রেদোয়ান হোসেন বলেন, আবদুল সাদেকের অযৌক্তিক দাবি না রাখায় তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। ওই সময় তিনি বলেন, ‘আমার কথায় রায়পুরা চলে। কি করবেন না করবেন জানি না। এই তিন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করে আমার প্রার্থীদের জিতিয়ে আনবেন। কথা মতো কাজ না করলে হাত-পা ভেঙে ফেলব। রায়পুরায় কীভাবে চাকরি করবে দেখে নেব। একেবারে বৃন্দাবনে পাঠাইয়া দিমু।’তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তাকে এভাবে কেউ যা ইচ্ছা তা বলে যাবে আর কেউ প্রতিবাদ করবে না তা সত্যিই দুঃখজনক। একের পর এক মানুষকে হুমকি দিলেও কোনো বিচার না হওয়ায় ওনার কাছে সবাই অসহায় হয়ে পড়েছে।এই ব্যাপারে জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল সাদেকের ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল মতিন বলেন, রোববার বিকেলে সমাজসেবা কর্মকর্তার মনটা খারাপ দেখেছি কিন্তু তিনি ঘটনা খুলে বলেননি। এরই মধ্যে তিনি ছুটি নিয়েছেন। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। আগামী বৃহস্পতিবার সবাইকে নিয়ে বসে এই ব্যাপারে করণীয় ঠিক করা হবে।এমএএস/পিআর