চুয়াডাঙ্গায় দিন দিন শীতের প্রকোপ বাড়ছে। আজও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায়। সীমান্তঘেঁষা এই জেলায় ঘন কুয়াশা ও উত্তরের হিমেল বাতাসে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা প্রায় থমকে গেছে। কনকনে ঠান্ডায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ ও ছিন্নমূল পরিবারগুলো।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গায় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এসময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৭ শতাংশ। চলতি শীত মৌসুমে এটিই জেলায় এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এছাড়া আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও এটি।
তীব্র শীতের সরাসরি প্রভাব পড়েছে স্বাস্থ্যখাতে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বিশেষ করে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীর চাপ বেড়েছে বহুগুণ। হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ জন বয়স্ক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। পাশাপাশি শিশু রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। প্রতিদিন প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ শিশু চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আসাদুর রহমান মালিক খোকন।
শীতের কারণে ব্যাহত হচ্ছে দিনমজুরদের কাজ। গ্রামাঞ্চল থেকে শহরে কাজের সন্ধানে আসা শ্রমিকরা জানান, ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত কাজ করতে হলেও ঠান্ডা ও হিমেল বাতাসের কারণে স্বাভাবিকভাবে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক সময় কাজ বন্ধ রেখে আগুন পোহাতে হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কৃষক আজিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমায় ভুগছেন। শীতের সময় সকালে মাঠে নামা তার জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। ঠান্ডায় কাজ করলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। তবুও জীবিকার তাগিদে কাজ করতে হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান জানান, আগামী কয়েক দিনে রাতের তাপমাত্রা আরও কমার আশঙ্কা রয়েছে। মাসের শেষ ভাগ কিংবা নতুন বছরের শুরুতে চুয়াডাঙ্গাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।হুসাইন মালিক/এফএ