দেশজুড়ে

বাস হেলপারের পিটুনিতে স্কুলছাত্র নিহত

বাস হেলপারের পিটুনিতে আহত হয়ে ৯ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলে নরসিংদীর মনোহরদীর অষ্টম শ্রেণির স্কুলছাত্র জিহান (১৪)। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।জিহান মনোহরদী উপজেলার শুকুন্দী গাছুয়ারকান্দা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য সেলিনা বেগমের ছোট ছেলে এবং নরসিংদীর শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল একাডেমির অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।   ময়নাতদন্ত শেষে জিহানের লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তার করুণ মৃত্যুতে সহপাঠী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।  জানা যায়, ঈদের দিন বন্ধুদের সঙ্গে ভৈরব ব্রিজ ও আশপাশের এলাকায় বেড়াতে যায় জিহান। বাসায় ফেরার পথে শিবপুর উপজেলার সিঅ্যান্ডবি বাসস্ট্যান্ডে এসে গাড়ির চালক তাদের নামিয়ে দেয়। নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছার আগেই গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়ায় বাসের হেলপারের সঙ্গে জিহান ও তার বন্ধুদের কথাকাটাকাটি হয়। এ সময় বাসের হেলপার ও কয়েক যুবক জিহান ও তার বন্ধুদের ওপর হামলা করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হামলায় অংশ নেয় ওই বাসের হেলপার ও মোহরপাড়া গ্রামের কাজল মিয়ার ছেলে রবিন, রুহুল আমিনের দুই ছেলে হাবিবুল্লাহ ও মেহেদী, নুরুল ইসলামের ছেলে শাকিল ও দোপাত্তর গ্রামের হাসেম। এ সময় তারা গাছের ডাল নিয়ে জিহান ও তার বন্ধুদের ওপর হামলা করে। ওই সময় জিহানের বন্ধুরা দৌড়ে পালিয়ে গেলেও জিহানকে আটকে ফেলে তারা। পরে জিহানকে এলোপাতাড়ি পিটুনি দেয় তারা। এতে তার মাথায় আঘাত লাগে। পরে স্থানীয় লোকজন জিহানকে উদ্ধার করে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জিহানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইন্স হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরদিন সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মাথায় অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। লাইফ সাপোর্টে থাকা জিহান ৯ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বৃহস্পতিবার সকালে মারা যায়। এ ঘটনায় গত রোববার জিহানের মা বাদী হয়ে শিবপুর থানায় চারজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তিনি বলেন, বিনা দোষে যারা আমার সন্তানকে হত্যা করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এ বিষয়ে শিবপুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল বাশার বলেন, ঘটনার পর থেকে আসামিরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সঞ্জিত সাহা/এএম/পিআর