জাতীয়

প্রাণ ফিরেছে শ্যালাতে

তেল বিপর্যয়ের ২৬ দিন পর আবারও নৌযান চলাচল শুরু হাওয়ায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে সুন্দরবনের শ্যালা নদী। বন্ধ হয়ে যাওয়া পথটি খুলে দেওয়া হয়েছে গতকাল বুধবার। এ দিন সকাল থেকে এ পথে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে নৌযান চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে মংলা-ঘষিয়াখালী নৌপথ চালু করার আগ পর্যন্ত এ পথে নৌযান চলাচল করতে পারবে।গত বছরের ৯ ডিসেম্বর শ্যালা নদীতে তেল বিপর্যয়ের ঘটনায় সোয়া তিন লাখ লিটার তেল বনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ১১ ডিসেম্বর সরকারের পক্ষ থেকে এই পথটি বন্ধ করে দেয়া হয়। কোস্টগার্ড মংলা পশ্চিম জোনের অপারেশন বিভাগের স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আলাউদ্দিন নয়ন জানান, শ্যালা নদীপথে নৌযান চলাচল শুরু করার বিষয়টি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ) মৌখিকভাবে তাকে জানিয়েছে।সরকারের তরফ থেকে এই পথে নৌযান চলাচলের অনুমতি দেওয়ার পর গতকাল বুধবার চার শতাধিক নৌযান বনের ভেতর দিয়ে মংলা বন্দরে যায়। তবে শুধু দিনের বেলায় নৌযান চলাচল করতে পারবে। সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে আপাতত তেলবাহী জাহাজ ও ট্যাংকার চলাচল বন্ধ থাকবে।এ ব্যাপারে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন জানান, কোনোভাবেই যাতে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে তেলবাহী কার্গো চলাচল করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছি।শ্যালা নদীতে নৌযান চলাচলের অনুমতি দেওয়ার আগে মংলা, খুলনা, শরণখোলা, কাউখালী ও আশপাশের এলাকায় প্রায় পাঁচ শতাধিক জাহাজ সার, জ্বালানি তেল, লবণ ও সিমেন্টের কাঁচামাল নিয়ে অবস্থান করছিল।মংলা বন্দরের হারবার মাস্টার কমান্ডার মো. হাসান জানান, নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় মংলা বন্দর ও এর আশপাশের নদীতে কয়েকশো নৌযান আটকে পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবারের মধ্যে নৌযানের জট কেটে যাবে বলে তিনি আশা করছেন।পণ্যবাহী কার্গোর চালক-কর্মচারী ও বন্দর ব্যবহারকারীরা সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে আবারও নৌপথ চালু হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কাউখালী উপজেলার আমড়াজুড়ি ফেরিঘাট এলাকা থেকে সন্ধ্যা নদীর চিরাপাড়া মোহনা পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটারজুড়ে নদীতীরে অর্ধশত জাহাজ নোঙর করে ছিল। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে বালু, পাথর, তেল, গম, সিমেন্ট ও সিমেন্টের কাঁচামাল বোঝাই এসব জাহাজ খুলনা ও মংলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় যাওয়ার উদ্দেশে এসেছে।মংলা বন্দর ব্যবহারকারী সমন্বয় কমিটির মহাসচিব মো. সাইফুল ইসলাম সরকারের এ সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক জানিয়ে বলেন, সরকারের উচিত হবে আগামী ৬ মাসের আগেই ঘষিয়াখালী চ্যানেল নৌযান চলাচলের উপযোগী করা। তাহলে সুন্দরবন ও পরিবেশ এবং বন্দর সবার স্বার্থই রক্ষা হবে।