আগামীকাল ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। দিনটি উদযাপনে নতুন রূপে সেজেছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জানাতে এখন পুরোপুরি প্রস্তুত স্মৃতিসৌধ। রং তুলির আঁচরে পাল্টে গেছে পুরো স্থাপনার চিত্র। বাহারি ফুলে তৈরি হয়েছে অপরূপ সৌন্দর্য। জাতির গৌরব আর অহংকারের এ দিনটি উদযাপনে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ঢল নামবে লাখো মানুষের। তাদের হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় ভরে উঠবে শহীদ বেদী। সাভারে অবস্থিত স্মৃতির এ মিনারকে ঘিরে টানা দুই সপ্তাহ ধরে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। অর্ধশতাধিক কর্মী নিয়োজিত ছিলেন ধোয়া-মোছার কাজে। ধোয়া-মোছার পরই পড়েছে রং তুলির আঁচর। লাল-নীল-সাদা রঙে সাজানো হয়েছে প্রতিটি ইট। ফুলের টবেও লেগেছে রঙের ছোঁয়া। নান্দনিকতা বাড়াতে বাদ যায়নি বাগানের ঘাসও। ঘাসের আগাগোড়া ছেঁটে বাড়ানো হয়েছে বাগানের সৌন্দর্য। গণপূর্ত অধিদফতরের সাভার অঞ্চলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৫ দিন ধরে স্মৃতিসৌধে ধোয়া-মোছা ও রঙ লাগানোর কাজ হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা সব কাজ শেষ করেছি। এখন শুধু শ্রদ্ধা জানানোর পালা। তিনি জানান, ১৬ ডিসেম্বর ভোরে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের রাষ্ট্রীয় সম্মান জানাবেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। এরপরই জাতীয় সংসদের স্পিকার, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিরোধী দল ও কূটনৈতিক ব্যক্তিবর্গ শ্রদ্ধা জানাবেন। তারপরই সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। সাজসজ্জার জন্য ১২ ডিসেম্বর থেকে স্মৃতিসৌধে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্মৃতিসৌধ এলাকায় তৎপর স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। এ বিষয়ে সাভার সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান ফিরোজ জাগো নিউজকে জানান, নিরাপত্তা ইস্যুতে এবার বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এজন্য পুরো স্মৃতিসৌধকে নজরদারির আওতায় আনা হবে। স্মৃতিসৌধ এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে কয়েকটি উঁচু ওয়াচ টাওয়ার, সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করা হবে পুরো এলাকা। পুলিশের পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে সেনাবাহিনী, র্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃ্ঙ্খলা বাহিনী। সাদা পোশাকেও থাকবে গোয়েন্দারা। এদিকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানোর চূড়ান্ত মহড়া শেষ করেছে তিন বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল। এক সপ্তাহ ধরে শহীদ বেদীর সামনে কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছেন সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। ১৪ ডিসেম্বর দুপুরে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানোর চূড়ান্ত মহড়া পরিদর্শন করেন সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ওয়াকার-উজ-জামান। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বেশে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন দুজন সেনা কর্মকর্তা। আরএআর/আরআইপি