সাপ্তাহিক ছুটির দিন আজ শুক্রবার ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় বেড়েছে ক্রেতা এবং দর্শনার্থীদের ভিড়। সঙ্গে বেড়েছে নানা অব্যবস্থাপনাও। প্রথম কয়েকদিন মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় দর্শনার্থীরা সন্তুষ্ট থাকলেও শুক্রবার থেকে তাদের ক্ষোভ বেড়েছে। বিশেষ করে মেলা প্রাঙ্গণে ভিক্ষুক, হকার ও অঙ্কন শিল্পীদের অত্যাচারে তারা বিব্রত।সরেজমিনে মেলায় গিয়ে দেখা গেছে, মেলা প্রাঙ্গণে ভিক্ষুকের পাশাপাশি ভাসমান হকারদের আনাগোনা বেড়েছে। ক্রেতা বা দর্শনার্থীদের দেখলেই ভিক্ষার থালা হাতে বায়না ধরছে। এমন কি ভিক্ষার পরিমাণ কম হলেই পা জড়িয়ে ধরে বসে যাচ্ছে ভিক্ষুকরা।শুক্রবার সকালে মেলার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই মেলায় প্রবেশ করে ৮ বছরের শিশু সুমন। তার সঙ্গে ছোট ভাই আরীফ ও রিয়াজ। তারা জানায়, ‘সকালেই গেট দিয়ে দৌড়ে ঢুকে গেছি। মেলায় ঢুকতে পারলে অনেক টাকা পাওয়া যায়। তাই আমরা প্রতিদিন চলে আসি’।রাজধানীর রামপুরা থেকে বন্ধুসহ মেলায় এসেছেন সাইমা নুসরাত। মেলায় প্রবেশের পরপরই ছোট শিশুর ভিক্ষুকের একটি দল তাদের ঘিরে ধরে। পাঁচ টাকা দেয়ার পর আরও টাকা জন্য পা ধরে রাখে। পরে ২০ টাকা দিয়ে ভিক্ষুকদের হাত থেকে রক্ষা পান তারা।ভিক্ষুক ছাড়াও মেলার বিভিন্ন জায়গা ভাসমান হকারদের যেন অভয়ারণ্য। বাধাহীনভাবে পণ্য সামগ্রী বিক্রি করছেন তারা। তবে শুধু ভিক্ষুক কিংবা হকার নয়, বাণিজ্য মেলায় আঁকা শিল্পীদের কারণেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দর্শনার্থীরা। দর্শনার্থী সেজে মেলায় প্রবেশ করে আগত দর্শনার্থীদের ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও হাতে কিংবা গালে ফুল এঁকে দাঁড়িয়ে থাকে বকশিসের জন্য। বকশিসের পরিমাণ কম হলেই বায়না ধরে।মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় গুলশান থেকে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে শুরু করে মেলার বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১০ জন অঙ্কন শিল্পীর সঙ্গে দেখা হয়েছে। সবাই হাতে কিছু একটা এঁকে দেয়ার জন্য জোর করে । ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও হাত ধরে টানাটানি করে।সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ধানমন্ডি থেকে ছোট বাচ্চাসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে মেলায় এসেছেন ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রবেশপথেই অঙ্কন শিল্পীরা জোর করে বাচ্চার গালে ফুল এঁকে দুইশ’টাকা দাবি করে। ৫০ টাকা দিলেও ছাড়ে না। পরে ১০০ টাকা দিয়ে বিদায় হয়েছি।বিভিন্ন হকার, ভিক্ষুক ও অঙ্কন শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভিক্ষুকরা টিনের বেষ্টনী ভেঙে কিংবা বিশেষ কায়দায় মেলায় প্রবেশ করছে। তবে হকার এবং অঙ্কন শিল্পীরা টিকিট কেটেই মেলায় প্রবেশ করে।এদিকে মেলার সার্বিক অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জানতে মেলা সচিবালয়ে গিয়ে দায়িত্বরত কাউকেই পাওয়া যায়নি। মেলা সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘আমি মেলার বাইরে আছি। সেখানে (মেলা সচিবালয়)লোক আছে’। এমএসএস/আরএস/ওআর/পিআর