মহান মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রোববার ভোর পাঁচটা ২০ মিনিটে শেরপুর সদর উপজেলার কুমরি বাজিতখিলা এতিমখানার পাশে তাকে দাফন করা হয়।এর আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সড়ক পথে ময়মনসিংহ হয়ে কামারুজ্জামানের মরদেহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরপত্তার মধ্য দিয়ে শেরপুরে আনা হয়। ভোর সাড়ে ৪টায় তার মরদেহ নিজ গ্রামের বাড়ি শেরপুরের বাজিতখিলা এলাকায় পৌঁছায়। ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে কামারুজ্জামানের মরদেহ পরিবার-পরিজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তার বড় ভাই কফিলউদ্দিন শেরপুর সদর ইউএনও হাবিবুর রহমান হাবিবের নিকট থেকে মরদেহ গ্রহণ করেন। পরে ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে মুদিপাড়া এলাকার বাজিতখিলা-কুমরি এতিমখানা মাঠে নামাজে জানাযা শেষে ভোর পাঁচটায় বাজিতখিলা-গাজীর খামার সড়ক সংলগ্ন ওই এতিমখানার পশ্চিম পাশে দাফন করা হয়। জানাযা ও দাফনের সময় কামারুজ্জামানের আত্মীয়-পরিজন ও এতিমখানার শিশুরা ছাড়া অন্য কাউকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে থাকতে দেননি।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সাংবাদিক এবং কামারুজ্জামানের আত্মীয়-স্বজনসহ মোট ১৪টি গাড়ির বহর ঢাকা থেকে শেরপুর জেলা শহর হয়ে বাজিতখিলা বাজার মোড়ে পৌঁছায়। পরে সেখানে মিডিয়া কর্মীদের থামিয়ে দিয়ে বাজিতখিলা-গাজীর খামার সড়ক ধরে গাড়ি চলে যায় ওই মোড় থেকে এক কিলোমিটার দূরে মুদিপাড়া গ্রামের বাজিতখিলা-কুমড়ি এতিমখানার সামনে। এ সময় কোনো গণমাধ্যমকর্মী সাধারণ মানুষ কাউকেই ওই গ্রামে ঢুকতে দেয়া হয়নি। তবে কামারুজ্জামানের ভাই কফিল উদ্দিন জানান, রোববার ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে এতিমখানা প্রাঙ্গনে ফজরের আযানের আগেই জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করা হয়। কেবলমাত্র তাদের আত্মীয়-স্বজনদের উপস্থিতিতে জানাযার নামাজে জানাজা পড়ানো হয়। জানাজার নামাজ পড়ান কামারুজ্জামানের ভাগ্নী জামাই এবং বাজিতখিলা কুমরি দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার (অধ্যক্ষ) মাওলানা মো. আব্দুল হামিদ। জানাজায় তিন কাতারে প্রায় ৫০ জন লোক উপস্থিত ছিলেন বলে তিনি জানান। এরপর ভোর ৫টায় ওই এতিমখানার সামনে পূর্ব নির্ধারিত স্থানে কামারুজ্জামানকে দাফন করা হয়।এদিকে, দাফনের পর সকাল থেকেই এলাকার লোকজন কামারুজ্জামানের কবর দেখার জন্য ওই এতিমখানার সামনে জড়ো হতে থাকেন। কিন্তু পুলিশ-র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার কারণে তারা কবরের কাছে যেতে পারেননি। রাত থেকেই বাজিতখিলা এবং মুদিপাড়া গ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহল চলছে।অপরদিকে, কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় রোববার সকাল ১০টায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে শহরে আনন্দ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এস.এম. নূরুল ইসলাম হিরু। # কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরবিএ/এমজেড/এমএস