ক্যাম্পাস

বৈশাখী সাজে মতিহারের সবুজ ক্যাম্পাস

বাংলা ক্যালেন্ডার হিসেবে বাজছে চৈত্রের বিদায় ঘণ্টা। আসছে নয়া মাস বৈশাখ। বৈশাখ শুধু একটি নতুন মাসই নয়, এর মাঝেই লুকিয়ে আছে নতুন বাংলা বছরের আগমনী বার্তা। বিদায় নিচ্ছে বাঙালি জীবন থেকে আরও একটি বছর। আর হাজির হচ্ছে নতুন সৃষ্টির প্রত্যয় নিয়ে নানা স্বপ্ন ভরা বঙ্গাব্দ ১৪২২।সে সূত্রে বাংলা বর্ষপঞ্জির নতুন মাসের প্রথম তারিখ পয়লা বৈশাখ নিয়ে বাঙালির রয়েছে অন্তহীন আনন্দ-উচ্ছ্বাস ও উদযাপনের ইতিহাস। বর্ষবরণের মাধ্যমে বাঙালি হয়ে ওঠার এক অনন্য দিন।বাঙালির এই নববর্ষ বরণ করার জন্য আগ্রহের শেষ নেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থীদের। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে পালন করবে দিনটি। অতীত জীর্ণতাকে ভুলে নতুন সৃষ্টির প্রত্যয় নিয়ে এবারও রাবির বিভিন্ন বিভাগ এবং বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদযোগে আয়োজন করা হচ্ছে নানা অনুষ্ঠানের। বাঙালি সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তুলতে এবং জাতির প্রাণের এ উৎসবে মেতে উঠাতে হাজারও শিক্ষার্থী দিনটির জন্য মুখিয়ে আছে।বিভিন্ন বিভাগ ও সংগঠনের পৃথক বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের জন্য স্থান নির্ধারণ সম্পন্ন হয়েছে। বর্ষবরণের সকল প্রকার প্রস্তুতি শেষের দিকে। বর্ষবরণ উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মোড়ে আঁকা হয়েছে আল্পনা। যেন চিরচেনা সবুজ মতিহার বৈশাখকে বরণ করতে সবকিছুই পাল্টে গেছে।প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বর্ষবরণের মূল আয়োজন থাকছে চারুকলা বিভাগকে কেন্দ্র করে। বিভাগটি দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। পহেলা বৈশাখ সকাল ৯টায় “এসো হে বৈশাখ, এসো বাংলার আকাশে নববর্ষের বার্তা নিয়ে” উদ্বোধনী সঙ্গীতের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হবে। সকাল সাড়ে ৯টায় চারুকলা বিভাগের সামনে থেকে শুরু হবে রাজশাহী অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মঙ্গল শোভাযাত্রা। বিকেলে যন্ত্রসঙ্গীত, আবৃত্তি-সুন্দরম, শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৃত্যানুষ্ঠান। এছাড়া পরের দিন সকাল ১১টা থেকে আলকাপ, বাউল গান, আবৃত্তি, গাম্ভীরা। এছাড়া বিকেল ৫টায় যাত্রাপালা পানি পথের যুদ্ধ ইত্যাদি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও চারুকলা বিভাগের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে চারুকলা মাঠে দুই দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে।মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাঙালির ঐতিহ্য, কৃষ্টি-কালচার তুলে ধরতে তৈরি করা হয়েছে প্রধান দুটি মোটিফ ‘লোকজ ঘোড়া ও দোয়েল’। আর সঙ্গে থাকছে অশুভ শক্তি দূর কারার প্রত্যয় নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মুখোশ। এ ব্যাপারে চারুকলা বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বর্ষবরণ উপলক্ষে চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের বাড়তি অনুভূতি কাজ করে। আমাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাঙালির কৃষ্টি কালচার জাতির সামনে তুলে ধরতে চাই’। চারুকলা বিভাগের শিক্ষক ও পহেলা বৈশাখ ১৪২২ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. বিলকিস বেগম বলেন, ‘বর্ষবরণের সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ। আশা করছি আমরা বিশ্ববিদ্যালয় তথা রাজশাহীর সকল মানুষকে সুন্দর একটি অনুষ্ঠান উপহার দিতে পারব’। এছাড়া বাংলা, হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা, দর্শন, নাট্যকলা ও সঙ্গীত, ভূ-তত্ব ও খনি বিদ্যা, বাংলা, ইসলামের ইতিহাস, মার্কেটিং, নৃ-বিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা, লোক প্রশাসনসহ বিভিন্ন বিভাগের পক্ষ থেকে বর্ষবরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানের মধ্যে থাকবে মঙ্গল শোভাযাত্রা, বাঙালি ঐতিহ্যবাহী খাবার পান্তা-ইলিশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।এসএস/বিএ/পিআর