প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে সহিংসতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সহিংসতায় জড়িত ৩১ জনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন- ১ মো. নাইম (২৬), ২. মো. আকাশ আহমেদ সাগর (২৮), ৩. মো. আব্দুল আহাদ (১৮), ৪. মো. বিপ্লব (২২), ৫. মো. নজরুল ইসলাম ওরফে মিনহাজ (২০), ৬. মো. জাহাঙ্গীর (২৮), ৭. মো. সোহেল রানা (২৪), ৮. মো. হাসান (২২), ৯. রাসেল ওরফে সাকিল (২৮), ১০. মো. আব্দুল বারেক শেখ ওরফে আলামিন (৩১), ১১. মো. রাশেদুল ইসলাম (২৫), ১২. মো. সোহেল রানা (২৭), ১৩. শফিকুল ইসলাম (৩৪), ১৪. মো. প্রান্ত সিকদার ওরফে ফয়সাল আহমেদ প্রান্ত, ১৫. আবুল কাশেম ১৬. রাজু হোসাইন চাঁদ ও ১৭. সাইদুর রহমান (২৫)।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ১৮ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টা থেকে পরের দিন ভোর পর্যন্ত শাহবাগ মোড় থেকে কারওয়ান বাজার এলাকায় বিক্ষোভের সুযোগ নিয়ে কিছু দুষ্কৃতকারী প্রথম আলো ও পরে ডেইলি স্টার পত্রিকার কার্যালয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ চেষ্টা চালালেও বিপুল জনসমাগম ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে তাৎক্ষণিক কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারেনি পুলিশ। এমনকি ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আটকে দেয় বিক্ষোভকারীরা।
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম/ছবি-জাগো নিউজ
ঘটনার পর প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ মামলা করে। ডেইলি স্টারের মামলা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ শেষে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দুই প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় জড়িতদের থানা পুলিশ, ডিবি, সিটিটিসি ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা সিসিটিভি ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে শনাক্তে কাজ করছে।
আরও পড়ুনএবার খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধপুলিশ অ্যাকশনে গেলে গুলি হতো, দুই-চারজন মারা যেতহাদি হত্যার বিচারে ‘দ্রুত বিচারিক ট্রাইব্যুনাল’ গঠনের দাবি
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, এ পর্যন্ত থানা পুলিশ ১৩ জন, সিটিটিসি তিনজন এবং ডিবি একজনসহ মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সহিংসতায় জড়িত ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
গ্রেফতারদের একজন মোহাম্মদ নাইম (২৬)। তিনি ১ লাখ ২৩ টাকা লুট করেছে। তার কাছ থেকে লুট করা নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং লুটের টাকায় কেনা একটি টিভি ও একটি ফ্রিজ উদ্ধার করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানি ও সহিংসতা ছড়ানোর অভিযোগেও সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা খোঁজার চেয়ে দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় এনে প্রচলিত বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। অপরাধী যে দলেরই হোক বা যে মতাদর্শেরই হোক, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এমন সহিংসতা ঠেকাতে ভবিষ্যতে কী পরিকল্পনা নেবে ডিএমপি- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে আগাম তথ্য পেলে আরও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে গুজব, অপপ্রচার ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানি বন্ধে গণমাধ্যমসহ সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার নজরুল ইসলাম।
টিটি/এমআরএম/বিএ/এমএস