শেরপুরে টর্নেডোর আঘাতে সদর উপজেলার পাকুরিয়া, বাজিতখিলা ও গাজীরখামার ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামসহ পৌর এলাকার একাংশের প্রায় দুই শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন।
৩০ সেকেন্ডের এই টর্নেডোতে শত শত গাছাপালা টর্নেডোর তাণ্ডবে উপড়ে পড়েছে। টর্নেডোর আঘাতে জেলায় ৩৩ কেভি বৈদ্যুতিক লাইনের খুঁটিসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে খুঁটি ভেঙে তার ছিঁড়ে যাওয়ায় শনিবার মধ্যরাত থেকে জেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রবল বাতাসের সঙ্গে এই টর্নেডো আঘাত হানে। এতে মুহূর্তে সব ভেঙে পড়ে।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানায়, প্রায় আধা মিনিটেরও কম সময় ধরে চলা এই টর্নেডোর আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় ঘরবাড়ি, উপড়ে পড়ে বিভিন্ন ধরনের গাছপালা। টর্নেডোর পরপরই শুরু হয় বজ্রসহ ঝড় ও শিলাবৃষ্টি।
এ সময় ঘর ও গাছচাপা পড়ে আহত হয় মানুষসহ গবাদি পশু। আহতদের শেরপুর জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, টর্নেডোতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকুড়িয়া ইউনিয়নের ফকিরপাড়া, সুনার পাড়া, বটতলা, চৈতনখিলা ও বাধাপাড়াসহ আশপাশের গ্রামগুলো। এসব এলাকাাতেই প্রায় দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি ও সহস্রাধিক গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে।
পাকুড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হায়দার আলী বলেন, মানুষ যখন ঘুমের প্রস্তুতি নিচ্ছে, ঠিক তখনই প্রবল বেগে এই টর্নেডো আঘাত হানে। এরপর পরই শুরু হয় বজ্রসহ বৃষ্টি।
তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকে সবকিছু হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো। আমি সরকারের কাছে তাদের দ্রুত পুনর্বাসন সহায়তা কামনা করছি।
শেরপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী বরুন সাহা বলেন, পাকুড়িয়া ইউনিয়নের চৈতনখিলা, বটতলা এলাকায় ৩৩ কেভি গ্রিড লাইনের ওপর অনেক গাছাপালা বিধ্বস্ত হয়ে পড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। উপড়ে পড়া ওসব গাছ অপসারণের কাজ চলছে। অপসরাণ কাজ শেষ হলেই পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা সম্ভব হবে।
টর্নেডোর ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ পেয়ে সকালে সদর ইউএনও মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, টর্নেডোতে পাকুড়িয়া, গাজীরখামার ও বাজিতখিলা ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। শত শত গাছপালা উপড়ে পড়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়নের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সকল ধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে।
হাকিম বাবুল/এএম/পিআর