পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ট্রাফিক পুলিশে হিজড়াদের নিয়োগ দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টিকে ইতিবাচক এবং গুরুত্বের সাথে দেখছেন।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সোশাল সেফটিনেট (সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী) সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির এক বৈঠকে ট্রাফিক পুলিশে হিজড়াদের নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়।আগামী অর্থবছর থেকে তাদেরকে ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেয়ার বিষয় নিয়েও বিশদ আলোচনা হয়েছে।শুধুমাত্র লিঙ্গ পরিচয়েই নয়, নিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে হিজড়াদের শিক্ষাগত যোগ্যতাকেও আমলে নেওয়া হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিশদ বিবরণ পরবর্তিতে সরকার কর্তৃক আরো বিশ্লেষণের পর সংশোধন করা হবে বলেও সভার আলোচনায় উঠে আসে।এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে, ডিএমপি’র এডিশনাল কমিশনার শেখ মো. মারুফ হাসান জানান, সরকার যদি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় তা অবশ্যই ইতিবাচক হবে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও ট্রাফিক পুলিশের সহায়তায় সরকারিভাবে হিজড়াদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে এ প্রক্রিয়াটি শুরু করা সম্ভব হলে হিজড়াদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশ আরও লোকবল পাবে।ডিএমপি’র ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের ডিসি খান মোহাম্মদ রেদওয়ান জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি শুনেছি। নিয়োগের প্রক্রিয়া কিভাবে শুরু হবে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবেন। তবে সিদ্ধান্তটি ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেন তিনি।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ সদর দফতরের এডিশনাল ডিআইজি পদ মর্যাদার এক কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রীসভায় হিজড়াদের ট্রাফিক পুলিশের নিয়োগ দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে শুনেছি। অফিসিয়ালি বিষয়টি এখনো অজানা। তবে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে, অর্থবাজেটের পরিকল্পনা কিভাবে হবে তা এখনো আলোচনা হয়নি। হিজড়াদের ট্রাফিকে নিয়োগের বিষয়টি আদৌ সম্ভব কিনা তা নিয়ে সন্দিহান পুলিশ সদর দফতরের এ কর্মকর্তা।পুলিশ সদর দফতেরর জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, হিজড়াদের ট্রাফিকে নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে সরকারিভাবে আলোচনা হয়েছে বলে জেনেছি। তবে অফিসিয়ালি এখনো পুলিশ সদর দফতর বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয়। পুলিশ সদর দফতর অফিসিয়ালি জানার পর এব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ থাকছে। তাই বিষয়টি ইতিবাচক না নেতিবাচক হবে তা আগাম বলা ঠিক হবে না।হিজড়ারা ২০১৩ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে একটি পৃথক লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এরপর থেকে তারা শিক্ষা এবং অন্যান্য অধিকারের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতে শুরু করেছে।প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত একটি জরিপ অনুযায়ী দেশে ১০,০০০ হিজড়া বসবাস করছে। হিজড়ারা সব ধরনের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত এবং সমাজের দ্বারা একঘরে হয়ে আছেন বলে হিজড়া কমিউনিটি বহুদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে। জেইউ/এআরএস/পিআর