উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তিতে প্রতারণার অভিযোগে যশোর শিক্ষাবোর্ডের ১১ কলেজকে শোকজ করা হয়েছে। সোমবার ও ১১ জুন বৃহস্পতিবার কলেজগুলোকে শোকজ করা হয়।শোকজপ্রাপ্ত কলেজগুলো হলো, যশোরের চৌগাছা উপজেলার পাশাপোল আম জামতলা কলেজ, জিসিবি কলেজ, এবিসিডি কলেজ, চৌগাছা ডিগ্রি কলেজ, মৃধাপাড়া ডিগ্রি কলেজ, হাকিমপুর মহিলা কলেজ, যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও তালবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ, সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ, খুলনার পাইকগাছার লক্ষ্মীপাশা কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং মাগুরা শালিখার আড়পাড়া কলেজ।যশোর শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীদের না জানিয়ে আগেই অনলাইনে আবেদন করায় বিপাকে পড়েছে বোর্ডের ছয় শতাধিক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। তারা ভর্তির আবেদন করতে গিয়ে দেখতে পায় আগেই আবেদন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বোর্ডের উপজেলা পর্যায়ের ১১টি কলেজের কর্তৃপক্ষকে শোকজ করা হয়েছে।যশোর বোর্ডের শোকজ করা সাতটি কলেজের মধ্যে ছয়টিই চৌগাছা উপজেলার। বাকী চারটির মধ্যে দুটি যশোর সদরের ও একটি মাগুরার শালিখা উপজেলার ও ১টি সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলার।শিক্ষার্থীরা জানান, গ্রামের কলেজগুলোতে প্রতিবছর এসএসসি`র ফলাফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থী সংগ্রহের হিড়িক পড়ে যায়। শিক্ষকরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ম্যানেজ করে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে উদ্বুদ্ধ করেন। কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষে অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম চালু হওয়ায় শিক্ষকরা আগের মত শিক্ষার্থী সংগ্রহ করতে পারছেন না। ফলে ওই কলেজগুলো ভিন্ন উপায় হিসেবে এলাকার পাস করা শিক্ষার্থীদের রোল নম্বর সংগ্রহ করে না জানিয়ে নিজের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য আগেই অনলাইনে আবেদন করে দিয়েছেন।পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে। ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী ফরমপূরণ করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়ে শিক্ষাবোর্ডে ধণ্যা দিচ্ছে।সমস্যা সমাধানের জন্য যশোর শিক্ষাবোর্ডে আসা রওশন আরা রশনি ও ফাতেমা তুজ জোহরা জানায়, আমরা পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে চাই। কিন্তু কে বা কারা অনলাইনে আমাদের ভর্তি ফরম পূরণ করে দিয়েছে। এ জন্য আমরা আবেদন করতে পারছি না।যশোর শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অমল কুমার বিশ্বাস জানান, ভর্তি প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ১১টি কলেজ কর্তৃপক্ষকে শোকজ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি কলেজ শোকজের জবাব দিয়েছে। সোমবার আরো চারটি কলেজকে তিন দিনের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।তিনি আরো বলেন, গ্রামের কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী সংগ্রহের প্রতিযোগিতা শুরু হয়। আগের বছরগুলোতে শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের মার্কশিট জোগাড় করে ভর্তি করতো। এবার অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় সেই সুয়োগ নেই। তাই কলেজগুলো শিক্ষার্থীদের রোল নম্বর সংগ্রহ করে আগেই নিজের কলেজে ভর্তির আবেদন করেছে। এ জন্য যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তাদের শোকজ করা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।অমল কুমার বিশ্বাস জানান, অনলাইনে আবেদন করতে না পারা শিক্ষার্থীরা বোর্ডে আবেদন করছে। সংশোধনের পর তারা আবেদন করতে পারছে। আর আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত অনলাইনে ভর্তির আবেদন করা যাবে বলেও জানান তিনি।মিলন রহমান/এআরএ/আরআই