পুঁজিবাজারে নেতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। টানা তিন সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিক দর পতনে দেশের শেয়ারবাজার। যেন খরা কাটছে না পুঁজিবাজারে। গত সপ্তাহও দেশের উভয় বাজারে কমেছে সব ধরনের সূচক লেনদেন ও বাজার মূলধন। দর পতন হয়েছে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর।এদিকে জাতীয় অর্থবছরের বাজেট পুঁজিবাজারবান্ধব হলে ঘুরে দাঁড়াবে পুঁজিবাজার। এমন ধরণা থাকলেও বাস্তবে তার উল্টো চিত্র। বাজেট পরবর্তী তৃতীয় সপ্তাহেও বাজারে নেতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। আর এভাবে চলতে থাকলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থাহীনতা সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।গত সপ্তাহ জুড়ে প্রতিদিনই মন্দাভাব ছিল দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহ শেষে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন কমেছে ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ বাজার। মূলধন কমেছে দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সিএসইএক্স কমেছে ১ দশমিক ২৮ শতাংশ। ডিএসই ও সিএসই’র ওয়েবসাইট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮৪২ কোটি ৭৬ লাখ ৬৭ হাজার ৬২৮ টাকার। আগের সপ্তাহের চেয়ে ৯৩ কোটি ৪৪ লাখ ৫৪ হাজার ৩৯৮ টাকা বা ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ কম। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৯৩৬ কোটি ২১ লাখ ২২ হাজার ২৬ টাকা।সপ্তাহ শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৬৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ডিএস ৩০ সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আর শরীয়াহ বা ডিএসইএস সূচক কমেছে ৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৫ শতাংশ।গেল সপ্তাহে কমেছে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর। ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩২৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১২ টির, কমেছে ১৮৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টির। আর লেনদেন হয়নি ২টি কোম্পানির শেয়ার।সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ। আর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) দশমিক ৮৯ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ৪১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।অন্যদিকে গেল সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক কমেছে ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক কমেছে দশমিক ৫৮ শতাংশ। আর সিএসইএক্স সূচক কমেছে ১ দশমিক ২৮ শতাংশ।সপ্তাহে সিএসইতে গড়ে মোট লেনদেন হয়েছে ২৬৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৮৫টির, কমেছে ১৫৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির। টাকার অংকে লেনদেন হয়েছে ১৫২ কোটি ২০ লাখ ৩০ হাজার ৬১৮ টাকা। যা গত সপ্তাহের তুলনায় ৫০ কোটি ৮ লাখ ৩২ হাজার ১৮২ টাকা কম। তার আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২০২ কোটি ২৮ লাখ ৬২ হাজার ৮০০ টাকা।প্রসঙ্গত, প্রস্তাবিত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে দেশের পুঁজিবাজারের জন্য বেশ কয়েকটি সুখবর রয়েছে। এগুলো মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- করমুক্ত লভ্যাংশের আয়ের সীমা বৃদ্ধি, কর্পোরেট করহার হ্রাস, আইপিওতে ২০ শতাংশ শেয়ার ছাড়ার ক্ষেত্রে কর রেয়াত সুবিধা, মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে উৎস কর আদায় থেকে অব্যাহতি এবং ব্যাংক, বীমা কোম্পানি ব্যতিরেকে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ১৫ শতাংশের কম লভ্যাংশের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ করারোপের প্রস্তাব দেওয়া হযেছে।এসআই/এআরএস/এমএস