দিন কয়েক বন্ধ থাকার পর শুক্রবার বিকেল থেকে আবারো হঠাৎ ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। এতে শেষ মুহূর্তের কেনা-কাটা ও ঈদ আনন্দ মাটি হলো কক্সবাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারণ লোকজনের। শুক্রবার রাতে অবিরাম বৃষ্টি হওয়ায় আবারো বন্যার আশঙ্কায় শঙ্কিত রয়েছেন ভাঙ্গন কবলিতরা। সাম্প্রতিক পাহাড়ি ঢলের বন্যায় বাড়ি-ঘর হারিয়ে দুর্ভোগে পড়া লোকজন আবারো বানের আশঙ্কায় দিনাতিপাত করছেন। ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনায় ঈদ উদযাপন করছে জেলাবাসী। রাত থেকে অবিরাম ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানসহ শহর ও মফস্বলের প্রায় প্রতিটি ঈদের নামাজে ব্যাঘাত ঘটে। সকাল সাড়ে ৮টায় কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জেলার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব অধ্যক্ষ মাহমুদুল হক। মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার জেলা পরিষদ প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, কক্সবাজার-রামু আসনের সাংসদ সাইমুম সরোওয়ার কমল, জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন ও পৌর মেয়র সরওয়ার কামাল। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির শান্তি কামনায় দোয়া করা হয়। তবে প্রচণ্ড বৃষ্টির কারণে মানুষ এক প্রকার বন্দি হয়ে পড়ে। কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকলেও কোন ধরনের সতর্ক সংকেত নেই। আরো কয়েকদিন মাঝারি অথবা ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস সূত্র। শুক্রবার বিকেল থেকে থেমে থেমে হওয়া বর্ষণের কারণে আগের মতো পানি জমে কক্সবাজার শহরের হোটেল-মোটেল জোন, কলাতলী, লারপাড়া, চাদেরপাড়া, হাজিপাড়া, পেশকারপাড়া, এসএমপাড়া, বিডিআর ক্যাম্প, পেতাসওদাগরপাড়া, রুমালিয়ারছরা, চরপাড়া, সমিতিপাড়াসহ শহরের আশপাশের নিম্নাঞ্চলের অনেক সড়ক উপ-সড়ক প্লাবিত হচ্ছে। এদিকে শহরের বাজারঘাটা, বড় বাজার ও আশপাশের সড়কও আগের মতো প্লাবিত হয়ে জন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। চাঁদ রাতে অনেক সড়ক জলমগ্ন থাকায় ক্রেতা বিক্রেতাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ ছালাম মার্কের স্টারপ্লাস শপিং এর সত্ত্বাধিকারী মুহাম্মদ মুরাদ ও ক্রোকারিজ বাজারের সত্ত্বাধিকারী মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, পুরো রমজান মাসটাই বেচা-কেনাহীন হওয়ায় চরম দুর্ভোগে গেছে। ঈদের দুয়েক দিন আগে আকাশ পরিষ্কার থাকায় ব্যবসায়ীরা একটু হলেও আশার আলো দেখতে পান। অতীতে চাঁদ রাতেও প্রচুর বিকিকিনি হতো। এবারও সবাই আশা করেছিলাম, লগ্নির আরো কিছুটা তুলে আনা সম্ভব হবে। কিন্তু শেষ সময়ের বর্ষণ সব আশা নিরাশায় পরিণত করেছে। ভারী বর্ষণের কারণে জলাবদ্ধতায় বিকিকিনি দূরে থাক দোকান খোলাও দূরহ হয়ে পড়ে। পানি থেকে মালামাল রক্ষা করতে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তারা। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ভাঙন মেরামত না হওয়া পর্যন্ত দুর্গত এলাকার প্রতি সকল ইউএনওকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার নির্দেশনা দেয়া আছে।সায়ীদ আলমগীর/এসএস/এমএস