দেশজুড়ে

বঙ্গবন্ধুর ‘হৈমন্তি’ বাঁচাতে নাটোরে বিশেষজ্ঞ দল

নাটোরের উত্তরা গণভবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে লাগানো ৪৬ বছরের ‘হৈমন্তি’ গাছ বাঁচাতে উদ্যোগ নিয়েছে নাটোর জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের একদল বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা গাছটি পর্যবেক্ষণ করেন।

আট সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাজিরুল ইসলাম। এ সময় নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাজ্জাকুল ইসলাম, নেজারত ডেপুটি কালেকক্টরেট (এনডিসি) অনিন্দ মন্ডলসহ গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাজ্জাকুল ইসলাম জানান, জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পর থেকে গ্রান্ড মাদার হাউস জঙ্গলে ভরপুর ছিল। পরে বর্তমান জেলা প্রশাসক গণভবন দর্শনার্থীদের উন্মুক্ত করে দেয়ার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে। সেসময় পরিষ্কার করতে গিয়ে গাছটি বঙ্গবন্ধুর স্বহস্তে রোপন করার বিষয়টি ধরা পরে।

১৯৭২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উত্তরা গণভবনে সফরকালে এ ‘হৈমন্তি’ গাছটি রোপন করেছিলেন। কিন্তু গাছটির চারদিকে ঝোপ-জঙ্গলে ভরা ছিল। পরে পরিষ্কার করে গোড়া বাঁধানাে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন অবহেলায় থাকার কারণে পোকার আক্রমণে গাছটি মরে যাওয়ার পথে।

এই অবস্থায় নাটোর জেলা প্রশাসন ইতিহাস ঐতিহ্য ধরে রাখতে গাছটি রক্ষার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় গাছটি বাঁচাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের এক দল উদ্যান বিশেষজ্ঞ গাছটি সরেজমিনে পরিদর্শনে যান।

এ সময় গাছটি বাঁচাতে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে বিশেষজ্ঞ দলটি। প্রতিনিধি দলে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শাহাদৎ হোসেন, ড. কবিতা আঞ্জুমান আরা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হর্টিকালচার বিভাগের পরিচালক কুদরতি গণি, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞনিক কর্মকর্তা এএসএম মেজবা উদ্দিন, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞনিক কর্মকর্তা মাফরুহা আফরোজ, সেচ ভবনের মার্কেটিং এক্সপার্ট বজলুর রহমান, নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম ও উদ্যান উন্নয়ন কর্মকর্তার উপ-পরিচালক মেফতাহুল বারীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধি দলের প্রধান বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাজিরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্ব-হস্তে লাগানো গাছ অনেক ঐতিহ্য বহন করে। বর্তমানে গাছটির বয়স ৪৬ বছর হয়েছে। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন-অবহেলায় থাকার কারণে পোকার আক্রমণে গাছটি নষ্ট হয়ে গেছে। তবে পুরোপুরি রিকভার করা সম্ভব না হলেও দীর্ঘদিন টিকিয়ে রাখতে বেশ কিছু পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কিছু উদ্যোগ নিলে গাছটি বাঁচানো সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

রেজাউল করিম রেজা/এফএ/পিআর