জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রোগীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে উঠেছে। এ ঘটনায় ওই চিকিৎসকের সঙ্গে রোগী ও তার স্বজনদের হাতাহাতি ও সদর থানায় উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। এছাড়া এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যায় জয়পুরহাট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই রোগীর মা।
রোগীর মা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হন তার মেয়ে। হাসপাতালের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ৩০ নম্বর বেড তার নামে বরাদ্দ হয়। ওই দিনই দিবাগত রাত ১টার দিকে ওই ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাহবুবুল হক রয়েল প্রথমে তাকে চেকআপ করেন। পরে রাত আড়াইটার দিকে চিকিৎসক মাহবুবুল আবারও চেকআপ করতে আসেন।
তিনি বলেন, ‘ওই চিকিৎসক বার বার আমার মেয়ের কাছে নার্স ছাড়াই চেকআপ করতে আসেন এবং চিকিৎসার নামে আমার মেয়ের শরীরের স্পর্শকাতর জায়গা স্পর্শ করলে সে প্রতিবাদ করে। এতে আমার মেয়ে চিকিৎসকের হাতের আঙুল ভেঙে দেয়ার চেষ্টা করে। পরে চিকিৎসক দ্রুত সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করলে ওয়ার্ডের বাইরে তাকে থাপ্পড় মারে আমার মেয়ে। ঘটনাটি শোনার পর ক্ষিপ্ত হয়ে তার জামাইও ওই চিকিৎসককে পিটিয়েছেন।’ এদিকে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এফএম মুছা আল মানছুর জানান, ওই নারী অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে অসুস্থ অবস্থায় জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাহবুবুল হক রয়েল তার চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ওই রোগী কোনো কেবিনে নয়, ওয়ার্ডে আছেন। সেখানে তার আশে পাশে অনেক রোগী ভর্তি আছেন। সেই অবস্থায় ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
তবে শ্লীলতাহানীর অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
অপরদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে চিকিৎসক মাহবুবুল হক বলেন,‘কল পেয়ে তিনি ওই রাতে দু’বার চেকআপ করার জন্য ২ নম্বর ওয়ার্ডের ৩০ নম্বর বেডে চিকিৎসা দিতে গেছেন। সেখানে স্ট্যাথোস্কোপ দিয়ে রোগীর শরীর চেকআপ করার সময় ওই রোগী ক্ষিপ্ত হয়ে তার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ করেন। পরে ওয়ার্ডের বাইরে রোগী ও তার স্বামীসহ স্বজনরা তাকে লাঞ্ছিত করেন।’
জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে উভয় পক্ষে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাশেদুজ্জামান/এফএ/আরআইপি