শ্রীলঙ্কায় রাজধানী কলম্বোতে সিরিজ বোমা বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় শোক জানিয়ে টুইটারে এক টুইট করে হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোববারের এই বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৮৯ জনের প্রাণহানি ঘটলেও মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট তার শোকবার্তায় ১৩৮ মিলিয়ন মানুষ মারা গেছেন বলে টুইটে উল্লেখ করেছেন।
তার এই টুইটের জেরে রীতিমতো নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। টুইটটি করার ১০ মিনিটের মধ্যে ১০ হাজার লাইক পড়লেও পরে তা মুছিয়ে ফেলা হয়। তবে টুইটার ব্যবহারকারীরা ওই টুইটের স্ক্রিনশট টুইট করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্বহীন আচরণের নিন্দা জানাচ্ছেন।
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে বলছে, শ্রীলঙ্কার জনগণের প্রতি আন্তরিক শোক জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে টাইপিং ভুলের কারণে তার এই শোকবার্তা গণমাধ্যমের শিরোনামে উঠে এসেছে। আজকের ভয়াবহ এই হামলার ঘটনায় যা লজ্জাজনক।
আরও পড়ুন : শ্রীলঙ্কায় হামলা : দুই ইসলামী চরমপন্থীকে সন্দেহ করছে পুলিশ
ট্রাম্প তার শোকবার্তায় লিখেছেন, গীর্জা এবং হোটেলে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক শোক প্রকাশ করছি; যে হামলায় কমপক্ষে ১৩৮ মিলিয়ন মানুষ মারা গেছেন এবং গুরুতর আহত হয়েছেন আরো ৬০০ জন। আমরা সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত আছি।
ইস্টার সানডের সকালে কলম্বোর বিলাসবহুল সিনামুন গ্রান্ড, শাঙ্গরি-লা ও কিনসবুরি হোটেল ও কলম্বোর সেন্ট অ্যান্থনি গীর্জা, নেগোমবোর সেন্ট সেবাস্তিয়ান গীর্জা ও বাত্তিকালোয়ার জিওন গীর্জায় ওই হামলা হয়েছে। দেশটির পুলিশের প্রধান বলেছেন, তিনি এই হামলার ব্যাপারে ১০দিন আগেই সরকারকেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন।
দেশটির প্রধান এবং প্রসিদ্ধ গীর্জাগুলো ইস্টার সানডের দিনে আক্রান্ত হতে পারে বলে ওই সতর্কবার্তায় জানান। রোববার সকাল ৮টার দিকে প্রথম বিস্ফোরণের খবর আসে। সময় যত গড়িয়ে যাচ্ছে নিহতের সংখ্যা ততই লাফিয়ে বাড়ছে। দেশটির ইতিহাসে এই হামলাকে কালো অধ্যায় হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : শ্রীলঙ্কায় কারফিউ জারি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ
রাজধানী কলম্বো-সহ পুরো দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তিনটি গীর্জা ও বিলাসবহুল তিনটি হোটেলে ভয়াবহ বোমা হামলায় ১৮৫ জন নিহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর দেশটির রাজধানীতে আরো দুটি বিস্ফোরণ ঘটে। কলম্বোর কাছের দেহিওয়ালা এলাকায় সপ্তম বিস্ফোরণে অন্তত দু'জন নিহত হয়েছে বলে খবর দিয়েছে ফরাসী বার্তা সংস্থা এএফপি।
এছাড়া অষ্টম বিস্ফোরণটি রাজধানীর ডেমাটাগোদার একটি আবাসন এলাকায় ঘটেছে। প্রথম হামলার কয়েক ঘণ্টা পর এই বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত বেড়ে ১৮৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী কিংবা ব্যক্তি রোববারের এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে হামলার পেছনে আত্মঘাতী বোমারুরা জড়িত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
এসআইএস/পিআর